সোমবার সকালে জয়নগরের রাস্তায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জয়নগরে মৃত শিশুর দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে কল্যাণী এমসে। মোমিনপুরের কাঁটাপুকুর মর্গ থেকে সোমবার সকালেই দেহ নিয়ে গাড়ি রওনা দেয় কল্যাণীর উদ্দেশে। পৌনে ১০টা নাগাদ সেই গাড়ি কল্যাণীতে পৌঁছেছে। তবে জয়নগর এখনও থমথমে। এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তার মাঝেই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা চলছে। জয়নগরের মহিষমারি বাজারে সোমবার সকালে অনেক দোকানপাটই খুলে গিয়েছে। কেনাবেচাও চলছে ধীর লয়ে। তবে রাস্তায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সংখ্যক পুলিশ ঘোরাফেরা করছে। দফায় দফায় টহল দিচ্ছে পুলিশের গাড়ি। এলাকায় রয়েছে পুলিশ পিকেট।
মৃত শিশুর দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে সোমবারই। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ কাঁটাপুকুর মর্গে পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু রবিবারই হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে সেখানে। ধর্ষণের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনায় পুলিশ পকসো আইনের কোনও ধারা যুক্ত করেনি, সেই প্রশ্ন তোলেন হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। আদালতে ভর্ৎসনা করা হয় রাজ্য সরকারকে। শিশুর পরিবারের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারি কোনও হাসপাতালে ময়নাতদন্ত করা হোক দেহের। আদালত সেই মতো কল্যাণী এমসে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
সূত্রের খবর, কল্যাণী এমসে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলে দেহ নিয়ে আসা হবে জয়নগরে। সেখানে শিশুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ওই সময় নতুন করে গ্রামে যাতে উত্তেজনা না ছড়ায়, সে দিকে নজর রেখেছে প্রশাসন। মূলত সে কথা মাথায় রেখেই সোমবার সকাল থেকে এলাকায় পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে জয়নগরে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে জলাভূমি থেকে ন’বছরের শিশুর দেহ উদ্ধার করা হয়। রাতেই গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্তকেও। অভিযোগ, শিশুটিকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। শনিবার এই ঘটনার জেরে দিনভর উত্তপ্ত থেকেছে মহিষমারি এলাকা। পুলিশ ফাঁড়িতেও উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। অভিযোগ, শিশু নিখোঁজের অভিযোগকে প্রথমে গুরুত্ব দিতে চায়নি পুলিশ। বরং ওই শিশুর পরিবারকে থানা থেকে থানায় ঘোরানো হয়েছিল। রবিবারও দিনভর উত্তপ্ত ছিল মহিষমারি। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থানা ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। সোমবার তাই সকাল থেকেই বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এলাকায়।