এই নদীতেই নৌকাডুবি হয়। চলছে তল্লাশি ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
আত্মীয়কে সমাধিস্থ করে ফিরছিলেন অনেকে। মাঝপথে উল্টে গেল নৌকো। মৃত্যু হয়েছে বছর তিনেকের এক শিশুর। নিখোঁজ দু’জন।
বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে বাসন্তীর হোগল ও মাতলা নদীর পুরন্দরেরমুখ এলাকায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে বাসন্তীর ৬ নম্বর সোনাখালি গ্রাম থেকে জনা কুড়ি যাত্রী নৌকোয় চেপে ক্যানিংয়ের গোলাবাড়ি এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের এক আত্মীয় মারা গিয়েছিলেন। দেহ সমাধিস্থ করে ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীতে তখন প্রবল হাওয়া বইছে। বড় বড় ঢেউ। টাল সামলাতে না পেরে উল্টে যায় নৌকো। রেশমা মোল্লা নামে বছর তিনেকের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আনজেদ জমাদার নামে বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তি ও এক শিশু নিখোঁজ বলে জানিয়েছে পুলিশ। রেশমার দেহ পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে।
প্রত্যক্ষদর্শী রফিকুল মোল্লা বলেন, ‘‘সকাল থেকেই আজ খুব হাওয়া ছিল। আমার নিজের নৌকোটি ঠিক আছে কিনা দেখতে দুপুরে নদীর পাড়ে আসি। সে সময়ে ওই নৌকোটি ক্যানিং থেকে বাসন্তীর দিকে আসছিল। ঠিক পুরন্দরের মুখে মাতলা ও হোগল নদীর সংযোগস্থলে হাওয়া ও প্রবল ঢেউয়ের মধ্যে পড়ে নৌকাটি। দূর থেকে বিপদ বুঝে আমি ও আর কয়েকজন নৌকো নিয়ে সে দিকে এগিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে পৌঁছনোর আগেই নৌকোটি ডুবে যায়।’’ রফিকুলরা কয়েকজন মিলেই উদ্ধারের কাজে হাত লাগান।
ডুবে যাওয়া নৌকোর যাত্রী মফিজ মোল্লা বলেন, ‘‘যখন রওনা হয়েছিলাম, তেমন ঢেউ ছিল না। কিন্তু একটু এগোতেই প্রচণ্ড হাওয়া, ঢেউ শুরু হয়। নৌকো টাল সামলাতে না পেরে উল্টে যায়। কোনও মতে প্রাণে বেঁচেছি।”
ঘটনার খবর পেয়ে বাসন্তীর বিডিও সৌগত সাহা ও সিআই (ক্যানিং) দুর্গাপ্রসাদ মজুমদার পৌঁছন ঘটনাস্থলে। যাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। অন্য দিকে, দ্রুত বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও বাসন্তী থানার পুলিশ উদ্ধার কাজ শুরু করে। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজদের খোঁজ মেলেনি।
বিডিও বলেন, ‘‘বেলা আড়াইটে নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। খবর পেয়েই উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। মোট সতেরো জন উদ্ধার হলেও এখনও পর্যন্ত দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”