প্রতীকী ছবি।
ভাঙড়ে হিমঘরের সীমানা-পাঁচিল নির্মাণের ক্ষেত্রে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠায় নড়েচড়ে বসল প্রশাসন। ঠিকাদার সংস্থাকে শোকজ়করেছে ব্লক প্রশাসন। ভাল ভাবে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ দিকে, এই ঘটনার পরেই হিমঘরের কাজ অত্যন্ত শ্লথ গতিতে হচ্ছে এবং ‘আবাস বন্ধু’ দুর্নীতি করেছেন বলে অভিযোগ তুলে তাঁর শাস্তির দাবিতে জমি কমিটি নতুনহাটের কাছে লাউহাটি-হাড়োয়া রোড অবরোধ করে বিক্ষোভদেখায়।
বারুইপুরের মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দার বলেন, ‘‘হিমঘর নির্মাণের কাজ নিম্নমানের হচ্ছে, এমন অভিযোগ পেয়ে আমাদের বাস্তুকারেরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। তারপরেই ঠিকাদার সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, নিম্নমানের দ্রব্য বদলে দিয়ে ভাল দ্রব্য দিয়ে কাজ শুরু করতে। কাজ বন্ধ হয়নি, কাজ চলছে।’’ আবাস বন্ধুর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসনের একটি সূত্র।
বুধবার ভাঙড়ের বহুমুখী হিমঘরের সীমানা-পাঁচিল নির্মাণের কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান এলাকার কিছু মানুষ। জমি কমিটি পাল্টা অভিযোগ তোলে, তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হিমঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। পাওয়ার গ্রিড এলাকায় রাস্তা অবরোধ করে তারা।
উভয় পক্ষের চাপে পড়ে ঠিকাদার সংস্থার পক্ষ থেকে বেশ কিছুক্ষণ কাজ বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফের কাজ শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিমঘরের কাজে ব্যবহৃত ইমারতি দ্রব্য পরীক্ষা করে দেখা হয়। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ হচ্ছিল। ঠিকাদার সংস্থাকে শোকজ় করা হয়।
দীর্ঘ দিন বাদে জমি কমিটির দাবি মেনে শুরু হয়েছে হিমঘর তৈরির কাজ। সম্প্রতি জমি কমিটি ওই এলাকায় সমবায় সমিতি গঠন করেছে। অভিযোগ, ওই সমবায় সমিতির নামে জমি কমিটি ঠিকাদার সংস্থাকে চাপ দিয়ে তাদের থেকে ইট, বালি, পাথর কিনতে বাধ্য করছে।
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন লড়াই করে ভাঙড়ের মানুষের জন্য সরকারের কাছ থেকে হিমঘর আদায় করেছি। ওরা (তৃণমূল) চায় না হিমঘর তৈরি হোক। তাই প্রতি ক্ষেত্রে বাধা দিচ্ছে। আমরা চাই দ্রুতগতিতে হিমঘর নির্মাণের কাজ শেষ করতে হবে। ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ আবাস বন্ধুকে বরখাস্ত করারও দাবি তুলেছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে পোলেরহাট ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাকিমুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে হিমঘর নির্মাণের কাজ করায় মানুষ ক্ষোভ দেখিয়েছেন। জমি কমিটি যদি সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত না থাকে, তা হলে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছে কেন? উল্টে তাদের উচিত সাধারণ মানুষকে সমর্থন করা। যাতে নিম্নমানের দ্রব্য দিয়ে হিমঘর তৈরির কাজ না হয়।’’