যত্ন: খাওয়ানো হচ্ছে সারমেয়দের। নিজস্ব চিত্র
পর্যটক, পুণ্যার্থী বা স্থানীয় দোকানদারদের দেওয়া খাবার খেয়েই পেট ভরত। কিন্তু লকডাউনের জেরে বেশ কিছু দিন হল পর্যটকেরা আসছেন না। বন্ধ দোকানপাট। ফলে খাওয়া জুটছিল না গঙ্গাসাগরের কপিলমুনির মন্দির চত্বরে থাকা কয়েকশো কুকুরের। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় ব্লক প্রশাসন তাদের খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছে।
করোনা-সতর্কতায় লকডাউনের আগে থেকেই পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের তরফে কপিলমুনি মন্দির চত্বর, হোটেল, আবাসনের পুণ্যার্থীদের সরিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় মন্দির চত্বরের ও সৈকত এলাকার সমস্ত দোকানপাট। এর ফলে সমস্যায় পড়ে কুকুরগুলিও। প্রাথমিক ভাবে ব্লক প্রশাসন ও পুলিশের তরফে শুকনো খাবার খাওয়ানো হত। ২৩ এপ্রিল থেকে ব্লক প্রশাসন এদের খাবারের দায়িত্ব নেয়। প্রশাসনের তরফে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এদের রান্না করা খাবার খাওয়ানোর জন্য। প্রতিদিন খাবার ঠিকঠাক পাচ্ছে কিনা, দেখভালের জন্য দু’জন সরকারি কর্মীও রাখা হয়েছে।
নবান্ন বা বিভিন্ন সরকারি দফতরের আধিকারিকেরা গঙ্গাসাগর মেলা ছাড়াও সারা বছর এখানে যাতায়াত করেন। তাঁদেরও নজরে ছিল ওই সারমেয়দলের বিষয়ে। কী অবস্থায় রয়েছে তারা, সে খবরও নবান্ন থেকে জানতে চাওয়া হচ্ছিল।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সকাল দুপুর রাতে তিনবার নির্দিষ্ট সময় মেনে খাওয়ানো হচ্ছে। সকালের টিফিনে থাকছে শুকনো খাবার রুটি, নেরো বিস্কুট বা মুড়ি। দুপুরে খাওয়ানো হচ্ছে আনাজ দিয়ে তৈরি খিচুড়ি। কপিল মুনির আশ্রম চত্বরকে প্লাস্টিক মুক্ত জ়োন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। তাই সারমেয়দের কাগজের প্লেটে করেই খাওয়ানো হচ্ছে। তিনশোর বেশি কুকুরের খাবার তৈরির জন্য কপিলমুনি মন্দিরের পাশে পঞ্চায়েত সমিতির কটেজে কিচেন রুম তৈরি হয়েছে। দুষণ বিধি মেনে পরিশ্রুত জলেই রান্না হচ্ছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কর্ণধার শিবপ্রসাদ মহারাজ বলেন, ‘‘পাঁচটি জায়গায় আলাদা আলাদা করে খাবার দিতে হয়। টোটোয় করে নিয়ে গিয়ে খাবার দিয়ে আসা হয়। আমি অনেক আগে থেকেই নিজের উদ্যোগে খাওয়ানো শুরু করেছিলাম। এখন ব্লক প্রশাসনের সহযোগিতায় খাওয়ানো হচ্ছে।’’
সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘লকডাউনের আগে থেকেই ওদের দুর্দশার কথা মাথায় ছিল। তাই নিয়ম করে খাওয়ানোর জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। চাল-ডাল নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে। খাওয়ানোর বিষয়টি দু’জন কর্মী তদারক করছেন।’’