চলছে মিিটং। নিজস্ব চিত্র।
অন্ধকারে রাস্তার চারপাশে গ্রামের কিছুই চোখে পড়ে না। দু’টো বাল্বের আলো লক্ষ্য করে পুকুরপাড়ের মাটির রাস্তা ধরে অনেকটা এগিয়ে দেখা গেল এক উঠোন ভর্তি লোক। দূরত্ববিধি তো নেই, কারও মুখে মাস্কও নেই। বুধবার জলপাইগুড়ি শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে একটি গ্রামে এমনই একটি ভিড়কে ‘মোদীজির কৃষি আইন’ বোঝাতে শুরু করলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। সন্ধ্যে পেরিয়ে তখন রাত নেমেছে। গ্রাম্য ভিড়কে সুকান্ত খরগোশ-হাতির গল্প শোনাচ্ছেন। বলছেন, “জঙ্গলে আকাশ ভেঙে পড়েছে বলে কে যেন রটিয়ে দিয়েছিল। খরগোশ-হাতি সবাই ছুটে পালাচ্ছিল। আপনারা সেরকম গুজবে কান দেবেন না।”
বিজেপি সূত্রের খবর, জেলার প্রতিটি গ্রামের প্রতিটি বুথে বাসিন্দাদের ডেকে চা-বিস্কুট, মুড়ির মোয়া খাইয়ে কৃষি আইন নিয়ে প্রচার চলছে। জলপাইগুড়ির রাহুতবাগানের পরেশনগরে এ দিনের এই বুথসভায় জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ও ছিলেন। তিনি সভা শুরুর কিছু পরে পৌঁছন। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীও সভায় ছিলেন। জলপাইগুড়ির গ্রামে বালুরঘাটের সাংসদ এসে কৃষি আইন বোঝাবেন, দু’জন সাংসদ ও জেলার শীর্ষ নেতারা থাকবেন এই খবর বিজেপির তরফে প্রচারও হয়নি। দলের এক নেতার কথায়, “আগে থেকে বেশি করে প্রচার করলে তৃণমূল বাধা দিত। মিডিয়ার সামনে গ্রামের অনেক লোক আসতেও চায় না।”
দল সূত্রের খবর, প্রতিটি বুথের সভায় জেলা নেতাদের অবশ্যই উপস্থিত থাকতে হবে বলে রাজ্য থেকে নির্দেশ গিয়েছে। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “আমরা গ্রামে গিয়ে সকলকে ডেকে কৃষি আইন নিয়ে নিজেদের কথা বলছি। সকলে আগ্রহভরে শুনছেন, বুঝতেও পারছেন।” এ দিনের কর্মসূচির নাম ছিল ‘শোনো চাষিভাই, মায়েরা’। কী বলছে বিজেপি? সাংসদ সুকান্ত বলেন, “নতুন কৃষি আইনে দালাল বা ফড়েরা মুনাফার টাকা আর খেতে পারবে না। আপনারা সরাসরি ফসল বিক্রি করতে পারবেন।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর কটাক্ষ, “ভয় পেয়ে বিজেপি রাতের অন্ধকারে বাসিন্দাদের ঝুরি ঝুরি মিথ্যে কথা বলে বেড়াচ্ছে।”