তপন দেবনাথ
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে উপভোক্তাদের কাছ থেকে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠল বসিরহাটের বিজেপি নেতা তথা কাউন্সিলর তপন দেবনাথের বিরুদ্ধে। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার কঙ্করপ্রসাদ বাড়ুই বলেন, ‘‘তপন দেবনাথের বিরুদ্ধে কিছু মানুষ বাড়তি টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে তদন্ত করে পুলিশের পক্ষে গত ৩১ ডিসেম্বর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। জেলা এবং মহকুমাশাসকের পক্ষেও তদন্ত করা হচ্ছে। রিপোর্ট উচ্চ আদালতে পাঠানো হবে।’’ তপনের অবশ্য দাবি, পরিকল্পনা করে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুলাই মাসে বসিরহাট পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলার তপনের বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। বাসিন্দাদের একাংশ বিক্ষোভে সামিল হন। পুলিশ জানায়, আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তরফে বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসন এমনকী মুখ্যমন্ত্রীকেও জানানো হয়। উপভোক্তাদের তরফে রঞ্জিত দাশগুপ্ত, চঞ্চল দাস, চিরন্তন পালিত, সবিতা বিশ্বাসরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। তার ভিত্তিতে পুলিশের পক্ষে তদন্ত শুরু হয়।
রঞ্জিত বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার ঘর পেতে ২৫ হাজার টাকা জমা দিতে হয়। সেখানে বেআইনি ভাবে তপন দেবনাথ ভয় দেখিয়ে এক এক জনের কাছ থেকে ৩০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। এমনকী, ঠিকাদার নিয়োগ করে নিম্নমানের ইমারতি সরঞ্জাম দিয়ে ঘর করা হচ্ছে। যাঁরা কাটমানি দিতে পারেননি, তাঁদের ঘরের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’
তৃণমূলে যোগ না দেওয়ায় পরিকল্পনা করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করে তপন বলেন, ‘‘১৪৯টি ঘরের মধ্যে ইতিমধ্যে ১০৯টি ঘরের ভিত তৈরি হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ বাড়তি সরঞ্জাম দিয়ে ঘর করতে গিয়ে কিছু বাড়তি খরচ করতে পারেন কিন্তু তাই বলে আমরা কারও কাছ থেকে ২৫ হাজারের বেশি টাকা নিইনি।’’
তপনের পাল্টা দাবি, ‘‘রঞ্জিতের পাকা বাড়ি, এসি মেশিন আছে। তা সত্ত্বেও তিনি বেআইনি ভাবে সরকারি ঘরের জন্য আবেদন করেছিলেন। ঘর না দেওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ এনে প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।’’ এ প্রসঙ্গে রঞ্জিতের বক্তব্য, তাঁর এক ছেলের বাড়ি-এসি আছে। তবে অন্য ছেলের জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন।
বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘তৃণমূল কারওর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে না। কেউ যদি অন্যায় করে থাকে, তা হলে পুলিশ-প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।’’