cyclone amphan

‘ফিরতে হবে ভিন্ রাজ্যেই’

এলাকায় ফিরে দেখি, সে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। আমপানের জেরে চারদিকে ধংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। গ্রামের পথ সব জলের তলায়। জল ঠেলেই পৌঁছলাম বাড়ির কাছাকাছি। দেখি, বাড়ি বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। খড়ের চাল দেওয়া মাটির বাড়ি ছিল আমাদের।

Advertisement

সুদীপ সর্দার, (হাসনাবাদের খলিসাখালির বাসিন্দা)

হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২০ ০১:১১
Share:

ফাইল চিত্র

তামিলনাড়ুতে যাই কয়েক মাস আগে। পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ করতাম। লকডাউনে কাজ বন্ধ হয়। খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ি। খাওয়া-থাকার খরচ জোগাতে হিমসিম খাচ্ছিলাম। বাড়ি থেকে পাঠানো টাকায় কোনও রকমে কয়েকটা দিন চলেছিল। কিন্তু এ ভাবে টানা যাবে না, বুঝে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। টাকা ধার করে বাস ভাড়া জোগাড় হয়। কিন্তু এলাকায় ফিরে দেখি, সে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য। আমপানের জেরে চারদিকে ধংসস্তূপের চেহারা নিয়েছে। গ্রামের পথ সব জলের তলায়। জল ঠেলেই পৌঁছলাম বাড়ির কাছাকাছি। দেখি, বাড়ি বলতে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। খড়ের চাল দেওয়া মাটির বাড়ি ছিল আমাদের।

Advertisement

তিন ভাই, দুই বৌদি, তাঁদের চারটে বাচ্চা ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে থাকতাম। আমপানে সেই চাল উড়ে যায়। বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে বাড়ির মাটির দেওয়ালও ভেঙে যায়। বাড়ির সবাই এক প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। এখন একটু জল নেমেছে। তাই বাড়ির পাশেই ত্রিপল টাঙিয়ে কোনও রকমে মাথা গুঁজে আছি। খাবার, পানীয় জল জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। বাড়ির বাচ্চাদের বারাসতে এক দাদার বাড়িতে রেখে এসেছি কয়েক দিন আগে। বেসরকারি ত্রাণ যতটুকু পাচ্ছি, তা খেয়েই দিন কাটছে।

সরকারি ভাবে ঘরের টাকা পাইনি। জানি না কবে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে। মনে হচ্ছে বাড়ি না এলেই ভাল হত। বাড়ি বলতেই তো আর কিছু নেই। যে ভাবে জমিতে জল ঢুকেছে, তাতে গ্রামে যে চাষবাস হত, তা-ও আর হবে কিনা জানা নেই। গ্রামে কাজ পাওয়াই মুশকিল। ভাবছি ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলে তামিলনাড়ুতেই ফিরব। এখানে খাওয়া জুটবে না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement