প্রতীকী ছবি
এক দিকে রাস্তার বেহাল দশা। অন্য দিকে, দুই বাসের রেষারেষি। যার জেরে একটি বাসের নীচে পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক মোটরবাইক চালকের। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বারাসত-টাকি রোডের কদম্বগাছিতে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত সেলিম আখতার (২৯) পেশায় স্কুলশিক্ষক ছিলেন। ওই ঘটনার পরে বেহাল রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে যান চলাচলের প্রতিবাদে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। পুলিশ পরে দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। বাসটি আটক করা হলেও চালক পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ বারাসতের কাজিপাড়ার বাড়ি থেকে মোটরবাইক নিয়ে দেগঙ্গায় যাচ্ছিলেন সোহাই শ্বেতপুর প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক সেলিম। পথে কদম্বগাছির বামনমুড়ায় ঘটনাটি ঘটে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, এমনিতেই ওই রাস্তায় ইট-বালি উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। তার উপরে শাসন, খড়িবাড়ির মতো এলাকা থেকে বেআইনি ভাবে মাটি কেটে ওই রাস্তা দিয়েই তা নিয়ে চলাচল করে ডাম্পার। সেই গাড়ি থেকে মাটি ছড়িয়ে পড়ে রাস্তায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন ভোর থেকে হাল্কা বৃষ্টি হওয়ায় সেই মাটি গলে রাস্তা পিছল হয়ে গিয়েছিল। ওই সময়ে দু’টি বাস রেষারেষি করতে করতে বসিরহাট থেকে বারাসতের দিকে দ্রুত গতিতে ছুটছিল। উল্টো দিক থেকে আসছিলেন সেলিম। বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ এড়াতে মোটরবাইক নিয়ে রাস্তা থেকে নীচে নামার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু পিছল মাটিতে চাকা পিছলে পড়ে যান। তখনই একটি বাস পিষে দিয়ে যায় তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাসটিকে আটকে দেন। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। খবর পেয়েই দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছি ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে বাসটিকে আটক করে। দেহ তুলে নেওয়ার পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্কুলে আসার পথে প্রিয় শিক্ষকের মৃত্যুর খবর সোহাই শ্বেতপুরে পৌঁছতেই কেঁদে ফেলে সুজাউদ্দিন, আনিসা পরভিন, মেহবুব মণ্ডলের মতো ছাত্রছাত্রীরা। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় স্কুল। প্রধান শিক্ষক নিজামুল করিম বলেন, ‘‘ইংরেজির শিক্ষক সেলিম যেমন ভাল পড়াতেন, তেমনই সুন্দর ব্যবহার ছিল তাঁর। সবাই ওঁকে ভালবাসতেন।’’ খবর পেয়ে সেলিমের বাড়িতে ভিড় করেন প্রতিবেশীরা। কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী মহসিনা বিবি। তাঁদের দু’বছরের একটি মেয়ে আছে।