ভোটের বিধি মানতে গিয়ে বিয়ের রেজিস্ট্রি করাতে হল এক দম্পতিকে।
বসিরহাট ১ ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পদটি এ বার মহিলা সংরক্ষিত। ওই পদে দাঁড়ানোর মতো যোগ্য প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছিল না তৃণমূল। অনেক খুঁজে পেতে দলের নেতারা ঠিক করেন, তফসিলি জাতির সুপর্ণা দাসকে মনোনয়ন দেওয়া যায়।
তাঁকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজিও করেন নেতারা। কিন্তু গোল বাধে অন্য জায়গায়। জানা যায়, তফসিলি জাতির শংসাপত্রই নেই সুপর্ণার।
দিন আনা দিন খাওয়া পরিবার। দিনমজুর স্বামীর সামান্য আয়ে সংসার চলে। সুপর্ণার মোবাইল ফোন পর্যন্ত নেই। কিন্তু তফসিলি জাতির শংসাপত্র তো চাই মনোনয়ন দিতে গেলে।
তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাহানুর মণ্ডল বলেন, ‘‘সুপর্ণা বিয়ের আগে তপসিলি জাতির শংসাপত্র তোলেননি। তা ছাড়া, সামাজিক মতে নিত্য দাসকে বিয়ে করলেও রেজিস্ট্রি না করায় প্রয়োজনীয় নথি জোগাড় সম্ভব হয়নি।’’
এই অবস্থায় সুপর্ণার বিয়ের রেজিস্ট্রি করানোর উদ্যোগ করেন নেতারাই। সেই মতো বিয়ের আয়োজন হয়।
ছোটখাট অনুষ্ঠানে মিষ্টিমুখ করানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন সাহানুর। তাঁর কথায়, ‘‘নিত্য-সুপর্ণার বিয়েতে আয়োজনের কোন ত্রুটি রাখা হয়নি। বিয়ের জন্য আনুষ্ঠানিক সরঞ্জাম থেকে শুরু করে ঘটা করে গ্রামের শতাধিক মানুষের মধ্যে মিষ্টি বিলি হয়েছে।’’ রেজিস্ট্রি বিয়ের পরে তপসিলি জাতির শংসাপত্র হাতে হাতেই মিলেছে। তারপরে তড়িঘড়ি বাকি কাগজপত্র জোগাড় করে মনোনয়নও জমা দিয়েছেন সুপর্ণা।
কবে ভোট হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এখনও পর্যন্ত যা হিসেব, নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল বাদে আর কেউ ১৬টি আসনের কোনওটিতেই মনোনয়ন জমা করেনি।
সুপর্ণার কথায়, ‘‘সাহানুরদার জন্যই তো প্রধান পদে প্রার্থী হতে পারলাম। এত বড় একটা দায়িত্ব পাব স্বপ্নেও ভাবিনি। ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’’
আর একই মানুষকে দু’বার বিয়ের ব্যাপারটা?
সাত বছরের পুরনো দাম্পত্যের পরেও সুপর্ণার ঠোঁটের কোণে লাজুক হাসি খেলে যায়।