আনন্দে-আবির: হাবড়ায়। ছবি: সুজিত দুয়ারি
বামেদের ‘খাসতালুক’ হিসেবে পরিচিত ছিল হাবড়া ১ ব্লক। ওই এলাকাতেই এ বার শোচনীয় ভরাডুবি হল বামেদের। বিজেপি পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে মাত্র। বাকি সব ক’টিই এখন শাসকদলের দখলে।
যদিও বিরোধীরা ওই ফলাফলকে কোনও গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের দাবি, এখানে কোনও ভোটই হয়নি। মানুষের রায়ের প্রতিফলনও হয়নি। কারণ ছাপ্পা তো ছিলই, ভোট গণনার সময়েও কারচুপি করা হয়েছে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লকের ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৭টি দখল করেছে তৃণমূল। একমাত্র বাঁশপুল গ্রাম পঞ্চায়েতটি ত্রিশঙ্কু হয়েছে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ৬টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ও কংগ্রেস পেয়েছে ২টি করে আসন। বিজেপি ও নির্দল পেয়েছে ১টি করে আসন। হাবড়া ২ পঞ্চায়েত সমিতির ২২টি আসনের সব ক’টি পেয়েছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের ২টি আসনেও জিতেছে শাসকদলের প্রার্থীরা।
তবে তৃণমূলের সাফল্যের মধ্যে কাঁটা হয়ে বিঁধে থাকল তৃণমূলের ১ জন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও ২ জন উপপ্রধানের পরাজয়। বাঁশপুল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান জিন্না খায়ের মণ্ডল ও উপপ্রধান সন্ন্যাসী গায়েন পরাজিত হয়েছেন। এ ছাড়া, গুমা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী উপপ্রধান তৃণমূলের বিজন দাস ও ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের দলের অঞ্চল সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদারের স্ত্রী পরাজিত হয়েছেন। দলের একাংশের অভিযোগ, ওই প্রধান ও উপপ্রধানের পরাজয়ের কারণ, মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং স্বজনপোষণে যুক্ত থাকা।গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১২৮টি আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ১৪টি আসন। সিপিএম পেয়েছে মাত্র ৮টি আসন। গত পঞ্চায়েত ভোটেও সিপিএম তথা বামেরা এখানে দুই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৮টি আসন পেয়েছিল তাঁরা।
কেন এমন ফল?
অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘এখানে ভোটই হয়নি। ছাপ্পা ও গণনার সময়ে সন্ত্রাস করে কারচুপি করা হয়েছে। ফলে হাবড়া ২ ব্লকের ভোট নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।’’ বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘আমাদের এক জয়ী প্রার্থীকেও গণনায় জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। মানুষের রায় নয়, এখানে শাসকদলের গায়ের জোরে ভোট হয়েছে।’’
বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, ‘‘সারা বছর মানুষের পাশে আছি আমরা। এলাকার উন্নয়ন করেছি বলেই মানুষ আমাদের বিপুল ভোটে জিতিয়েছেন। এখানে কোথাও কোনও সন্ত্রাস হয়নি।’’