শেষমেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভোগাবে না তো, প্রশ্ন বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের

বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরও নামছে ভোটে

এই রাজ্যে সব থেকে বেশি আসনে ভোট হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে মোট বুথ হয়েছে ৩৭,১১৭টি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৮ ০১:৫৪
Share:

ভোটযাত্রা: সুন্দরবনের পথে। ইছামতী পার হচ্ছেন ভোটকর্মীরা।

একদিকে অসহ্য গরম। অন্য দিকে হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টি আর বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তার মধ্যেই মঙ্গলবার ভোট। তাই আগাম সতকর্তা হিসেবে এই প্রথম প্রতিটি ব্লকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরকে কাজে লাগাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘কোনও বুথে কোনও ভোট কর্মী কিংবা কোনও ভোটদাতা যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন, তা হলে ওই দফতরকে সঙ্গে সঙ্গে নামানো হবে।’’

Advertisement

এই রাজ্যে সব থেকে বেশি আসনে ভোট হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ভোটে মোট বুথ হয়েছে ৩৭,১১৭টি। এ দিন হিঙ্গলগঞ্জ, বাগদা, সন্দেশখালির মতো সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে পুলিশ এবং ভোটকর্মীদের পাঠানো শুরু হয়েছে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে। জেলাশাসক বলেন, ‘‘অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে প্রতিটি বুথে এক জন করে সশস্ত্র পুলিশ, এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা হচ্ছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেই হিসেবে জেলার সর্বত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থাকবে টহলদারি পুলিশও। মহকুমা স্তরে কিছু পুলিশ আলাদা করেও রাখা হবে। কোথাও কোনও অসুবিধা হলে তারা সেখানে যাবে।’’

Advertisement

ইতিমধ্যেই জেলার ‘উত্তেজনাপ্রবণ’ বুথে রুট মার্চ শুরু করেছে পুলিশ। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সেই টহলদারিতে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা হচ্ছে।

ভোটকেন্দ্রের দিকে। দেগঙ্গায়।

সিপিএম নেতা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, ‘‘ওই ভলান্টিয়ারদের কাছে না আছে লাঠি, না আছে কোনও অস্ত্র। গোটাটাই হ্যস্যকর। প্রহসন চলছে।’’ বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটের আগে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো বা আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের কথা বলা হলেও বাস্তবে তেমন কোনও পদক্ষেপ জেলা পুলিশের তরফে দেখা যায়নি। জেলা বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদার বলেন, ‘‘নিরাপত্তা নিয়ে তৃণমূল পক্ষপাত করছে। ভোটের নিরাপত্তার কাজে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করে তৃণমূল বুঝিয়ে দিচ্ছে, তারা নিরাপত্তা দিতে চাইছে না। কারণ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ওরা নিজেদের দলীয় কাজে ব্যবহার করবে।’’

বিরোধীরা নিরাপত্তা নিয়ে অভিযোগ তুললেও শাসক তৃণমূল অবশ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে খুশি। দলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘আমাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষী পর্যন্ত তুলে নেওয়া হয়েছে। এমন নিরাপত্তা অতীতে কখনও আমরা দেখিনি। ভোটে জেলায় কমিশনের তরফে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আমরা খুশি।’’

তাঁর অভিযোগ, বিজেপি বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীদের ঢোকাতে চাইছে। জ্যোতিপ্রিয়র কথায়, ‘‘দলীয় ভাবে আমরা বাগদা, স্বরূপনগর, গাইঘাটা সীমান্ত এলাকায় নজরদারি করছি। বিরোধীরা বক্তব্য, ‘‘কারা সন্ত্রাস করছে তা মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। বাইরে থেকে দুষ্কৃতীদের জড়ো করা হচ্ছে।’’

তবে ভোটের দিন সন্ত্রাস হলে সাধারণ মানুষ পথে নামবেন বলে আশা সিপিএমের। দলের জেলা কমিটির সদস্য পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘‘শাসক দল ভোটের দিন যতটা সহজে ভোটে করিয়ে নেবে বলে ভাবছে, তত সহজ হবে না। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সন্ত্রাসের প্রতিরোধ করব।’’

ছবি তুলেছেন নির্মল বসু ও সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement