—প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটের চার দিন আগে আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা। মঙ্গলবার সেখানে ‘বোমা’র আঘাতে এক তৃণমূল সমর্থকের ভাইপোর মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় সিপিএম এবং আইএসএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে রাজ্যের শাসকদল। যদিও এই বিষয়ে সিপিএম এবং আইএসএফ-এর বক্তব্য জানা যায়নি। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার অভিযুক্তদের বারাসত আদালতে তোলা হবে।
দেগঙ্গার শোয়াইসেতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙার্টি গ্রামে মিছিল করে যাচ্ছিলেন তৃণমূল সমর্থকেরা। অভিযোগ, সেই মিছিলকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন ১৭ বছরের তরুণ। তাঁকে দেগঙ্গা ব্লকের বিশ্বনাথপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহতের কাকা মহম্মদ আরসাদুল হক নিজেকে দীর্ঘ দিনের তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচয় দিয়ে বলেন, “আমরা মিছিল করে যাচ্ছিলাম। আমার ভাইপো ইবরাম হোসেনও আমাদের সঙ্গে যাচ্ছিল। মিছিলে হঠাৎই বোমা ছোড়ে সিপিএম, আইএসএফ-এর লোকেরা।” প্রশাসনের কাছে বিচার চেয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাইব প্রশাসন যেন দোষীদের উপযুক্ত সাজা দেয়।” পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত তরুণ স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া।
তৃণমূল এবং আইএসএফ সংঘর্ষে মঙ্গলবার উত্তপ্ত হয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাও। পঞ্চায়েতের ২৩০ এবং ২০৯ নম্বর বুথ এলাকায় দুই রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। নামানো হয় র্যাফও। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দলীয় পতাকা বাঁধাকে কেন্দ্র করে আইএসএফ এবং তৃণমূল গন্ডগোল শুরু হয় দেগঙ্গার চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের রায়কোলা এলাকায়। ওই সংঘর্ষে দুই পক্ষের পাঁচ জন আহত হন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, দেগঙ্গা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে লাঠি উঁচিয়ে দু’দলের কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে। তবে এর পরও শেষ হয়নি অশান্তি। পরস্পরের বিরুদ্ধে এলাকায় বোমাবাজি করার অভিযোগ তোলে আইএসএফ এবং তৃণমূল।
ওই ঘটনার এক ঘণ্টার মধ্যে চাকলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বক্সিরহাটি ২০৯ নম্বর বুথে সিপিএম এবং তৃণমূলের সংঘর্ষ শুরু হয়। একে অপরের গাড়ি ভাঙচুর থেকে শুরু করে মারামারিতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। জখমদের মধ্যে রয়েছেন মহিলারাও। এই দুই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবারও রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হল দেগঙ্গা। সেই হিংসার বলি হলেন ১৭ বছরের তরুণ।