প্রতীকী ছবি।
পুলিশের গুলিতে নিউ টাউনের সাপুরজি এনক্লেভের একটি আবাসনে লুকিয়ে থাকা দুই দুষ্কৃতীর মৃত্যুর পরে নড়ে বসল বারাসত ও ব্যারাকপুর পুলিশ। যদিও আবাসনকে ঘিরে ঘটনার ঘনঘটা আগেও ছিল। যেমন, দক্ষিণ কলকাতায় গৃহকর্ত্রী রবীন্দ্র কউর লুথরা নিজের ফ্ল্যাটে তাঁর পরিচারকের হাতে খুন হয়েছিলেন। আবার রোমা ঝাওয়ার অপহরণে ধৃত গুঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে অরবিন্দ নামে এক ডাকাতকে খুন করার অভিযোগও উঠেছিল। যে অরবিন্দ সল্টলেকের একটি কেন্দ্রীয় সরকারি আবাসনে ট্যাক্সিচালক সেজে ভাড়া থাকত। তাই পুলিশের এই নড়ে বসা কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলে দেবে বলে মত আবাসিকদের।
আপাতত এলাকার আবাসনগুলির নিরাপত্তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে বারাসত ও ব্যারাকপুর পুলিশ। শুক্রবার থেকেই বারাসত পুলিশ জেলার প্রতিটি থানা এলাকা, তাদের অধীন আবাসনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ব্যস্ততার কারণে সপ্তাহান্তের দিনগুলি ছাড়া আবাসিক সংগঠনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক সম্ভব নয়। শুক্রবার থেকেই আবাসনগুলির সঙ্গে থানাগুলিকে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। দেখা হবে, ওরা কী কী সাবধানতা অবলম্বন করছে। পুলিশও আবাসনগুলির নিরাপত্তা মজবুত করতে পরামর্শ দেবে।”
বারাসত ও মধ্যমগ্রাম মিলিয়ে ১০০টির মতো বড় আবাসন রয়েছে বারাসত পুলিশ জেলার অধীনে। অতীতে বহু দুষ্কৃতী ডেরা বেঁধেছে বারাসতে। রাজীব হত্যা মামলা কিংবা কামদুনি কাণ্ডে জড়িতেরা বারাসতের বিভিন্ন আবাসিক বাড়ি থেকেই ধরা পড়েছিল।
মধ্যমগ্রামের একটি আবাসনের আবাসিক সংগঠনের সদস্য মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “কেউ ফ্ল্যাট ভাড়া নিলে তাঁর পরিচয়পত্র জমা রাখা হয়। বাইরের গাড়ি আবাসনে ঢুকলে তার নম্বর নিরাপত্তকর্মীরা লিখে রাখেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও সংগ্রহে রাখা হয়।”
বছর তিনেক আগে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের অধীন সোদপুরের ট্র্যাফিক মোড়ের এক আবাসনের ভাড়ার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছিল খড়দহ থানার পুলিশ। সেই আবাসনের আবাসিক সংগঠনের তরফে অনুপম ধরচৌধুরী বলেন, “নিউ টাউনের ঘটনার পরেই এখানের নিরাপত্তা নিয়ে ফের আলোচনা করেছি। সিসি ক্যামেরা রয়েছে। গেটে নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন থাকেন। আরও যা প্রয়োজন করা হবে।”
ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা শুক্রবার জানান, নিরাপত্তা নিয়ে আর কী কী করণীয়, তা লিফলেট দিয়ে সব আবাসনকে জানানো হবে। তিনি বলেন, “কোভিড নিয়ে সচেতনতায় আবাসনগুলির জন্য গত বছর লিফলেট করা হয়েছিল। তাই কোথায়, কোন আবাসন রয়েছে, তা থানাগুলির জানা। নিরাপত্তার স্বার্থে কী করা উচিত, তা জানাতে আবাসনগুলিকে লিফলেট বিলি করা হবে।”
পুলিশের অবশ্য দাবি, বড় আবাসনের অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে মাঝেমধ্যে বৈঠক হয় থানার। ছোট আবাসনগুলিকে সচেতন করতে মাইকেও প্রচার চলে।