মণ্ডল দম্পতি।
স্বামী মাটি কাটেন। তাজ করেন পানের বরজেও। স্ত্রী বাড়ি বাঁধেন। সংসারে বাহুল্য না থাকলেও মোটের উপরে খাওয়া-পরা চলেই যায়। কিন্তু সংসারের দু’জন রোজগেরে সদস্যও এই পরিস্থিতিতে নাজেহাল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার হরিপুর পঞ্চায়েতের উত্তর চন্দনপিড়ির দেবকুমার মণ্ডলের পরিবার নোট-কাণ্ডে এমনিতেই বিপাকে পড়েছিলেন। তার উপরে সপ্তাহ দু’য়েক হল গৃহকর্তার হাত ভাঙায় সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে। হাতে টাকা না থাকায় চিকিৎসা করাতেও সমস্যায় পড়েছেন বলে জানালেন।
দেবকুমারবাবুর কথায়, ‘‘নানা জায়গায় কাজের সুবাদে হাজার দু’য়েক টাকা আমার পাওনা আছে। কিন্তু টাকা চাইতে গেলেই সকলে বলছেন, তোর তো অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাহলে পুরনো নোটই নে।’’ কিন্তু সেই নোট নিতে অস্বীকার করছেন দেবকুমারবাবু। শুধু পুরনো টাকা নিলেই তো হল না, তা অ্যাকাউন্টে জমা করে নতুন নোট নেওয়ার ঝক্কি কি কম! এই অবস্থায় মাত্র ২০০ টাকা নগদে নিয়ে এসেছেন মালিকের কাছ থেকে।
জানালেন, প্রায় ১৪ কিলোমিটার পথ উজিয়ে দশ মাইল বাজারের রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু পর পর দু’বার তাঁকে টাকা না পেয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। দেবকুমারের স্ত্রী প্রতিমা বিড়ি বাঁধা মহাজনের বাড়িতে বিড়ি বাঁধার কাজ করেন। তিনি জানালেন, বাড়িতে বড় মেয়ে মাধ্যমিক দেবে। আর দুই ছেলেমেয়েও পড়াশোনা করে। স্বামী-স্ত্রীর হাজার দ’শেক টাকা আয়ের সেই সংসার এখন কেবল ধারেই চলছে। কেউই নগদে বকেয়া মেটাতে
চাইছেন না।