প্রতীকী ছবি
ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলায় ধৃত, বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের ভাইপো সঞ্জিৎ (পাপ্পু) সিংহের বাড়ি এবং কয়েকটি জায়গা থেকে থেকে বাজেয়াপ্ত হল বেশ কিছু নথি। সোমবার রাতে পাপ্পুকে সঙ্গে নিয়ে তিনটি জায়গায় তল্লাশি চালায় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগ।
গত শনিবার ভাটপাড়া-নৈহাটি সমবায় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে আসা পাপ্পুকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা বিভাগ। ওই মামলায় এর আগে তাঁকে তিন বার নোটিস পাঠিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু তিনি হাজির হননি। সোমবার রাতে পুলিশ পাপ্পুকে নিয়ে প্রথমে তাঁর ভাটপাড়ার বাড়িতে যায়। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ভাটপাড়ায় অর্জুন সিংহের পাশের বাড়িটিই পাপ্পুর।
এর পরে ইছাপুরের মায়াপল্লিতে অর্জুন ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালায় গোয়েন্দা বিভাগ। সেখান থেকেও বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। শেষে দমদম এলাকার কাশীপুরে অর্জুনের এক মহিলা আত্মীয়ের বাড়িতে তল্লাশি চলে। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি সেখান থেকেও মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। পাপ্পুকে জেরা করেই ওই বাড়িগুলির কথা তারা জানতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত হওয়া নথিগুলি এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে মনে করা হচ্ছে। তবে এই প্রসঙ্গে অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘কী নথি পাবে পুলিশ? সব লোক দেখানো। পুলিশ আসলে বিনা কারণে আমাকে এবং আমার আত্মীয়দের হেনস্থা করছে।’’
তৃণমূলে থাকাকালীন বিধায়ক পদের পাশাপাশি ভাটপাড়ার পুরপ্রধান এবং ওই সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন অর্জুন। সেই সময়ে পুরসভার কাজের জন্য ২৬ জন ঠিকাদারকে ১৬ কোটি টাকা ঋণ দেয় ওই ব্যাঙ্ক। পরে দেখা যায়, সেই কাজ আদৌ হয়নি। জাল নথি তৈরি করে কোটি কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেই ঋণ ওই ঠিকাদারেরা শোধও করেননি। তদন্তে দেখা গিয়েছে, ঋণের টাকা ঠিকাদারদের অ্যাকাউন্ট থেকে পাপ্পুর সংস্থার অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সেই টাকার একটি অংশ দিয়ে পাপ্পু ওই ব্যাঙ্কেরই পুরনো ঋণ শোধ করেছেন। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অজয় ঠাকুর বলেন, “ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলা প্রায় শেষের পথে। এ বার যে সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে, তাঁদের গ্রেফতার করা হবে।”