Polluting Ichamati River

ইছামতীতে আবর্জনা ফেলতে দেখলে ছবি তুলে পাঠান: পুরপ্রধান

স্থানীয় সূত্রের খবর, পুজোর সামগ্রীর পাশাপাশি গৃহস্থ বাড়ির আবর্জনাতে নিয়মিত ভরছে নদীবক্ষ। মৃত পোষ্যের দেহও নদীতে ফেলন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০২
Share:

ইছামতী নদীতে পুজোর ফুল, বেলপাতা ও নানা উপচার ফেলছেন মানুষ - দূষিত হচ্ছে জল। —নিজস্ব চিত্র।

বেলা প্রায় ১২টা। বৃহস্পতিবার বনগাঁ শহরে বনগাঁ থানার ঘাটে এক ব্যক্তিকে দেখা গেল, ইছামতীর পাড়ে দাঁড়িয়ে জলে পুজোর ঘট, কুলো, ফুল-বেলপাতা ফেলছেন। তেল, ঘি, মধু জলে পড়ে তেলের স্তর ছড়িয়ে পড়ল নদীতে। এ সব কেন ফেললেন নদীতে? জবাব এল, ‘‘সকলেই তো ফেলে! নদীতে ছাড়া আর কোথায় ফেলব? এত বড় নদীতে এইটুকু তেল পড়লে কোনও অসুবিধা হবে না।’’

Advertisement

এটি ব্যতিক্রমী ঘটনা নয়। কিছু মানুষের অসচেতনতার ফলে এ ভাবেই রোজই দূষিত হচ্ছে নদীর জল। এই মনোভাব রুখতে এ বার কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে পুরসভা। পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘নদীতে যে কোনও রকম আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে পুরসভার পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হবে। স্পিড বোটেও চলবে নজরদারি। ধরা পড়লে জরিমানা করা হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘কাউকে নদীতে ফেলতে দেখলে মোবাইলে ছবি তুলে আমাদের কাছে পাঠিয়ে দিন। আমরা আইনি পদক্ষেপ করব।’’

স্থানীয় সূত্রের খবর, পুজোর সামগ্রীর পাশাপাশি গৃহস্থ বাড়ির আবর্জনাতে নিয়মিত ভরছে নদীবক্ষ। মৃত পোষ্যের দেহও নদীতে ফেলন অনেকে। প্রায়ই দেখা যায়, রায় ব্রিজ ও রাখালদাস সেতুর উপর থেকে আবর্জনা ভর্তি পলিথিনের প্যাকেট রাতের ইছামতীর জলে ছুড়ে ফেললেন কেউ কেউ। বনগাঁ আপনজন মাঠ এলাকায় দেখা গেল, নদীর জলে মাটির হাঁড়ি, প্লাস্টিকের প্যাকেট, প্লাস্টিকের গ্লাস, থার্মোকলের থালা, কলাপাতা, প্রতিমার কাঠামো জলে পড়ে আছে। এমনিতেই ইছামতীর জল দূষিত। অতীতে বহু বার দেখা গিয়েছে, জলে আর্সেনিকের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি। ওই জলে চাষবাস বন্ধ করে দিয়েছেন অনেকে। বছরের বেশিরভাগ সময় নদী কচুরিপানা এবং কচুবনে ঢেকে থাকে।

Advertisement

দুর্গাপুজোর আগে বনগাঁ পুরসভার তরফে পুরসভা এলাকায় নদী কচুরিপানা মুক্ত করা হয়। জলদূষণ রুখতে প্রতিমা বিসর্জনের পুরসভা তরফে শহরের মধ্যে কয়েকটি ঘাট নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। পুজোর ফুল, বেলপাতা-সহ অন্যান্য সামগ্রী জলে ফেলতে দেওয়া হয়নি। প্রতিমার কাঠামো মেশিনের মাধ্যমে জলে ডুবিয়েই তুলে নেওয়া হয়েছিল। ফলে জল দূষণ অনেকাংশেই বন্ধ করা গিয়েছিল। কিন্তু পরিবেশ সচেতন মানুষের অভিযোগ, কিছু মানুষের বেপরোয়া মনোভাবের জন্য নদীর জল দূষিত হয়েই চলছে।

পরিবেশবিদেরা জানাচ্ছেন, আবর্জনা পচে ইছামতীর বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হতে বসেছে। এতে মাছের মৃত্যুও হতে পারে। তাঁদের দাবি, নদী বাঁচাতে শুধু প্রশাসনের উপরে ভরসা রাখলে হবে না। সকলকেই এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement