নতুন রাস্তার পিচের আস্তরণ উঠে আসছে এ ভাবেই! — নিজস্ব চিত্র।
দূর থেকে দেখলে মনে হবে রাস্তায় পিচের মখমল বিছানো। প্রশংসা করতে মন চাইবে। কিন্তু রাস্তায় এক পা দিলে মুহূর্তে এসে পড়বেন বাস্তবের রুক্ষ জমিতে। রাজ্য সরকারের পথশ্রী প্রকল্পে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা খরচ করে ১ কিলোমিটারের সামান্য বেশি রাস্তা তৈরি হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে। সেই রাস্তা উপর উপর দেখতে চমৎকার হলেও, আদতে সামান্য চেষ্টাতেই উঠে আসছে আস্ত পিচের আস্তরণটাই! নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তা তৈরি করার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীদের।
জয়নগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির বাইশহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিকাপুর গ্রাম। সেখানেই খোলাখালী হাট থেকে মোস্তফা শেখের বাড়ি পর্যন্ত পথশ্রী প্রকল্পের অন্তর্গত ১,১০০ মিটার পিচের রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। এ জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল ৩১ লক্ষ ৭৫ হাজার ৯৯৮ টাকা। রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে যথা সময়েই। দূর থেকে দেখলে মনে হবে অত্যন্ত সুন্দর পিচের রাস্তা। কিন্তু তাতে চলাফেরা করতে গিয়েই রহস্যভেদ হয়। স্থানীয়রা দেখতে পান, মাটির উপরে সামান্য পিচের প্রলেপ দিয়ে কোনও রকমে রাস্তাটি তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। অবস্থা এমনই যে, আঙুল দিয়ে সামান্য খোঁচালেই নতুন রাস্তা থেকে উঠে আসছে পিচের আস্তরণ। তার পরেই ঝুরঝুরে হয়ে তা ভেঙে পড়ছে। যা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী। নতুন রাস্তায় কেন এমন হবে, সেই প্রশ্ন করতে থাকেন পঞ্চায়েতের সদস্যদের। স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল আলি শেখ বলেন, ‘‘পিচের রাস্তা এ ভাবে উঠে যায় কোনও দিন দেখিনি। বাচ্চারা আঙুলে খোঁচা মারছে, আর পিচের আস্তরণ হাতে উঠে আসছে। পিচের রাস্তা এ রকম হয় না কি! প্রশাসনের কাছে আমাদের আবেদন, এই রাস্তায় পিচ তুলে নতুন করে তৈরি করে দিতে হবে। না হলে আমরা নিজেরাই রাস্তার পিচ তুলে দেব।’’ আর এক গ্রামবাসী আবু সালেম লস্কর বলেন, ‘‘বাচ্চারা খেলার ছলে রাস্তার পিচ তুলে দিচ্ছে। পিচের রাস্তার এই অবস্থা! ঠিকাদারকে বলতে গেলে সে পাল্টা হুমকি দেয়। বলে, যা পেরেছি তাই করেছি! আমরা সুবিচার চাই।’’
জয়নগর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রিয়াঙ্কা রায় মণ্ডল বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’’ জয়নগরের বিডিও এবং বারুইপুরের মহকুমা শাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সংবাদমাধ্যমের সামনে কেউ কিছু বলতে চাননি।