চিকিৎসায় গাফিলতিতে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনা

নার্সিংহোমের তরফে ও বাসন্তী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। শিশুর মাকে বাসন্তী গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাসন্তী: শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দিন তিনেকের এক শিশুকন্যা মৃত্যুতে উত্তেজনা ছড়াল বাসন্তীর সোনাখালির একটি নার্সিংহোমে। শনিবার সকালে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আসে। নার্সিংহোম কর্মীদের কয়েক জনকে শিশুর পরিবার-পড়শিরা মারধর করেছেন বলে অভিযোগ। শিশুটির বাবাকে নার্সিংহোমের লোকজনও পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

শিশুটির পরিবারের তরফে নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নার্সিংহোমের তরফে ও বাসন্তী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। শিশুর মাকে বাসন্তী গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার প্রসব বেদনা নিয়ে জীবনতলা থানার পথের দাবি এলাকার বাসিন্দা অপর্ণা হালাদার ভর্তি হন ওই নার্সিংহোমে। ওই দিনই একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। শুক্রবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। তার বাবা গোপাল হালদারের দাবি, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে তিনি একাধিক বর জানান, জ্বরে মেয়ের গা পুড়ে যাচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, তারপরেও তেমন কোনও চিকিৎসা হয়নি মেয়ের। কিছুক্ষণ পরে মৃত্যু হয় শিশুটির।

Advertisement

চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, নার্সিংহোমের কর্মীরা মারধর করে গোপালকে। মৃত শিশুটি-সহ তাঁকে নার্সিংহোম থেকে বের করে দেওয়া হয়।

শনিবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় স্থানীয় মানুষজন চলে আসেন নার্সিংহোমে। উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। উত্তেজিত জনতা নার্সিংহোমের বেশ কয়েক জন কর্মীর উপরে চড়াও হয়ে মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে বাসন্তী থানার পুলিশ আসে এলাকায়। পুলিশকে ঘিরে ও বিক্ষোভ দেখান এলাকার মানুষজন।

স্থানীয় বাসিন্দা আনসার মোল্লা বলেন, ‘‘এই নার্সিংহোমে কোনও এমবিবিএস ডাক্তার থাকেন না। হাতুড়েদের দিয়ে চলে চিকিৎসা। পুলিশের সঙ্গে যোগসাজসেই এমন চলছে।’’ গোপালের কথায়, ‘‘শুক্রবার রাত থেকে মেয়েটার জ্বর বাড়তে থাকে। আমি নিজে তিনতলা থেকে ওকে নিয়ে একবার সিস্টার, একবার ডাক্তারের কাছে যাই। কেউ কোনও সাহায্য করেননি। বলেন, সকালে দেখা যাবে। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মেয়ে মারা গেল। আমি চেঁচামিচি করায় আমাকে মেরে নার্সিংহোম থেকে বের করে দেয় ওরা।”

অভিযোগ মানতে চাননি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। নার্সিংহোমের মালিক মসিউর রহমান বলেন, “ডাক্তারবাবুরা ওয়ার্ডে পাখা চালাতে বারণ করা সত্ত্বেও শিশুটির পরিবারের লোকেরা পাখা চালান। ঠান্ডা থেকে বাঁচাতে শিশুটিকে বেশি করে কাপড়ে জড়িয়ে দেন। সে কারণেই শ্বাস বন্ধ হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। কাউকে মারধর করা হয়নি।’’

নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘‘এলাকার কিছু রাজনৈতিক নেতৃত্ব জোর করে আমাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার জন্য অশান্তির সৃষ্টি করেছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement