রবিবার প্রায় অয়নের চুঁচুড়ার বাড়ি এবং সল্টলেকের অফিসে টানা তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করেন ইডি আধিকারিকেরা। ফাইল চিত্র ।
নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত অয়ন শীলের নথিতে নাম পাওয়া শ্বেতা চক্রবর্তী কে? তিনি কি কামারহাটি পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরি করেন? এমনই ‘তথ্য’ উঠে আসছে পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহার বক্তব্যে। গোপাল জানাচ্ছেন, পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারের সহকারী পদে শ্বেতা যোগ দিয়েছিলেন ২০১৬ সালে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জড়িত প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দিলেন পুরপ্রধান।
অয়নের বাড়ি এবং অফিস থেকে যে সব নথি উদ্ধার করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), তাতে শ্বেতা চক্রবর্তী নামে এক মহিলার গাড়ি কেনার এবং সম্পত্তি হাতবদলের কাগজপত্র পাওয়া গিয়েছে। ইডি অবশ্য এই শ্বেতার পরিচয়, বা দুর্নীতিকাণ্ডে আদৌ তাঁকে অভিযুক্ত হিসাবে ভাবা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে কোনও ধরনের মন্তব্য করেনি।
এই শ্বেতাই কি কামারহাটি পুরসভার সহকারী ইঞ্জিনিয়ার? পুরপ্রধান বলেন, ‘‘২০১৬ সালে কামারহাটি পুরসভার সহকারী সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগদান করেন শ্বেতা। অফিসের কাজ ছাড়া ওঁর সঙ্গে কোনও রকম কথাবার্তা হত না। অয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তা-ও জানতাম না। এখন নানা কিছু শুনতে পারছি।’’ তিনি একই সঙ্গে জানিয়ে দেন, সত্যিই শ্বেতা কোনও অপরাধে জড়িত থাকলে সরকারি পদ্ধতি মেনে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কামারহাটি বিধায়ক মদন মিত্রের এই বিষয়ে কোনও বক্তব্য এখনও পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে নেমে বলাগড়ের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ইডি। গ্রেফতার করা হয় শান্তনুর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী অয়নকেও। রবিবার প্রায় ৩৭ ঘণ্টা ধরে অয়নের চুঁচুড়ার বাড়ি এবং সল্টলেকের অফিসে টানা তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করেন ইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে চাকরির পরীক্ষার একাধিক উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট এবং তার প্রতিলিপি পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্যান্য নথিও। ইডি সূত্রে দাবি, অয়নের কাছ থেকে যে সমস্ত ওএমআর শিটের প্রতিলিপি মিলেছে, সেগুলি পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার। অয়নের থেকে প্রাপ্ত নথিতে বেশ কয়েকটি পুরসভার নাম পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর। যদিও কামারহাটির পুরপ্রধান গোপালের দাবি, কামারহাটিতে ২০১৭ এবং ২০১৯ সালে নিয়োগ হয়েছিল। এবং তা হয়েছে বৈধ প্রক্রিয়া মেনেই।
ইডি সূত্রে খবর, অয়নের থেকে প্রাপ্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির নথি থেকে প্রায় ৫০ কোটি লেনদেনের হিসাব পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যে একটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে শ্বেতা চক্রবর্তীর নামেও। তবে অয়নের নথিতে নাম থাকা শ্বেতাই কামারহাটির পুরসভায় কর্মরত শ্বেতা কি না, সে বিষয়েও ইডির তরফে কিছু জানানো হয়নি।