অভিযুক্ত: মালতি।
বোনের দু’দিনের ছেলেকে হাসপাতালের মেঝেতেই আছাড় মেরে খুনের অভিযোগ উঠল শিশুটির মাসির বিরুদ্ধে।
সোমবার বেলা ১২টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের নাম মালতি সর্দার। গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রের খবর, বাসন্তী সর্দার নামে এক মহিলা শনিবার সন্দেশখালির ধামাখালি থেকে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দিদি মালতি। বাসন্তীর স্বামী কর্মসূত্রে অন্যত্র থাকেন।
শনিবার রাতেই সন্তানের জন্ম দেন বাসন্তী। অস্ত্রোপচার করে প্রসব হওয়ায় অসুস্থ ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ওয়ার্ডের মধ্যেই ছিলেন দিদি মালতি। দুপুরের দিকে হঠাৎই তিনি বোনের ছেলেকে নিয়ে ওয়ার্ড থেকে বাইরে বেরোন। হাসপাতালের মেঝেতেই শিশুটিকে আছাড় মারেন। মাথা ফেটে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি।
আচমকা এই দৃশ্য দেখে আশপাশের লোকজন হকচকিয়ে যান। মালতিকে ধরে ফেলেন কর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ আসে। মালতিকে গ্রেফতার করা হয়।
হাসপাতালের সুপার অর্ঘ্য চৌধুরী বলেন, “খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই আচমকা ঘটনাটি ঘটে যায়। রোগীর আত্মীয়ই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমরা কী ভাবে নিরাপত্তা দেব?”
সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাসন্তী। বলেন, ‘‘দিদির কোলেই ছিল ছেলে। কাঁদছিল। খিদে পেয়েছে ভেবে ওকে দুধ খাওয়াব বলে দিদির কাছ থেকে চাই। কিন্তু দিদি আমার কাছে না দিয়ে ওকে নিয়ে ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে গেল। তারপরে শুনি এই ঘটনা।’’
প্রত্যক্ষদর্শী মিনু দাস বলেন, “আমি সামনেই ছিলাম। দেখি আচমকা ওই মহিলা বাচ্চাটাকে নিয়ে মেঝেতে আছাড় মারলেন। ছুটে গিয়ে নিরাপত্তারক্ষী, সিভিক ভলান্টিয়ারদের খবর দিই। ওরা এসে ধরে ফেলেন মহিলাকে।’’
কিন্তু কেন এমন করলেন মালতি?
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। জেরায় নিজের দোষ স্বীকার করলেও ঠিক কী কারণে শিশুটিকে তিনি আছাড় মারলেন, তা স্পষ্ট হচ্ছে না। বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।’’