প্রতীকী ছবি।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারধর, ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল। মহিলা-শিশুদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ভাঙচুর হয়েছে বিজেপির দলীয় কার্যালয়ও।
শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে অশোকনগরের এজি কলোনি এলাকায়। জেলা বিজেপি নেতৃত্ব হামলার দায় চাপিয়েছে তৃণমূলের দিকে। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপির নিজস্ব কোন্দলের জেরেই এই ঘটনা। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। রবিবার সন্ধ্যায় এলাকায় শান্তি মিছিল করেছে তৃণমূল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই আদি ও নব্য বিজেপির মধ্যে বিবাদ চলছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দলীয় কার্যালয়ের দখল নিয়েই শনিবার গোলমালের সূত্রপাত।
শনিবার দুপুরে অশোকনগর স্টেশন-সংলগ্ন এলাকায় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে পতাকা পোড়াতে দেখা যায় দুই যুবককে। তাঁরা বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর বলেই পরিচিত। স্থানীয় সূত্রের খবর, ইদানীং তৃণমূলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতে দেখা যাচ্ছে তাঁদের।
সন্ধ্যায় বিজেপির লোকজন এই ঘটনা নিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে যান। এরপরেই রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ২০-২৫ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে বিজেপির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাণ্ডব চালায়।
বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাতে এলাকার বিজেপি নেতা প্রদীপ সরকারের বাড়িতে হামলা করা হয়। মারধর করা হয় তাঁর স্ত্রী, বিজেপির মহিলা নেত্রী মালা সরকারকে। তাঁদের পাঁচ বছরের মেয়ে রুশাকেও মারধর করা হয়েছে। তার চোখে আঘাত লেগেছে। তাকে চিকিৎসক দেখানো হচ্ছে। রুশার আগে থেকেই চোখের সমস্যা ছিল। লেন্স বসানো ছিল। সেখানেই নতুন করে আঘাত লেগেছে। ওই এলাকায় বিজেপির কার্যালয়ে থাকা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কাটআউট ভাঙা হয়েছে। দলীয় পতাকা-ব্যানার ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় বিজেপি নেতা রমেন বিশ্বাসের বাড়িতে ঢুকে তাঁর মাকে মারধর করা হয়। তাঁর মাথা ফুলে গিয়েছে। বিজেপির শ্রমিক নেতা সোমনাথ প্রামাণিকের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী গৌরীকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিজেপির শ্রমিক নেতা গৌতম ঘোষালের বাড়িতে ঢুকে হামলাকারীরা রান্নাঘর তছনছ করে।
মালা বলেন, ‘‘হামলাকারীরা আমাদের হুমকি দিয়ে বলেছে, বিজেপি করা যাবে না। হামলাকারীরা আগে তৃণমূল করত। পরে বিজেপিতে যোগদান করেছে। আবার তারা তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।’’
বিজেপি নেতা গৌতম আইচ ও রমেন বিশ্বাসের অভিযোগ, তৃণমূলের ইন্ধনে বিজেপির বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলা চালিয়েছে।
অভিযোগ, রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছে তরুণ দাস ও তপন গায়েনকে। তরুণকে জখম অবস্থায় হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তপন বলেন, ‘‘আমরা দীর্ঘ ধরে বিজেপি করি। বিজেপিতে আসা নতুন লোকজন আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে।’’
তবে ঘটনার দায় তৃণমূলের উপরে চাপিয়েছেন বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তৃণমূল এখন মারমুখী হয়ে উঠেছে।’’ তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অশোকনগরের বিধায়ক ধীমান রায় বলেন, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ। পুরোটাই বিজেপির দলীয় কোন্দলের ফল।’’