বিজেপি নেত্রীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর নৈহাটিতে

যদিও এই ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিচ্ছিল। ধৃত মনোজ এক সময়ে তৃণমূল করলেও ইদানীং বিজেপি নেতা হিসাবেই এলাকায় পরিচিত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

নৈহাটি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৫৮
Share:

নৈহাটিতে বিজেপি নেত্রী ফাল্গুনী পাত্রর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ।

বিজেপি নেত্রীর বাড়িতে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটল নৈহাটিতে। বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনায় তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন বিজেপির ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী ফাল্গুনী পাত্র। এক জনের নামে অভিযোগও দায়ের করেছেন তিনি। মনোজ সিংহ নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Advertisement

যদিও এই ঘটনায় বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের প্রসঙ্গ উঠে আসছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিচ্ছিল। ধৃত মনোজ এক সময়ে তৃণমূল করলেও ইদানীং বিজেপি নেতা হিসাবেই এলাকায় পরিচিত। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিতি আছে তাঁর। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, অর্জুন এবং ফাল্গুনীর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটল। তৃণমূল নেতৃত্বেরও দাবি, এই ঘটনা বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দলের ফল। এর সঙ্গে শাসক দলের কেউ জড়িত নয়।

মনোজ প্রসঙ্গে ফাল্গুনীর বক্তব্য, “অনেকে বলছেন মনোজ অর্জুনদার (সিংহ) ঘনিষ্ঠ। কিন্তু ওর কার্যকলাপের জন্য আমরা চার মাস আগে ওকে শো-কজ করেছিলাম।” কিন্তু বহিষ্কার হয়েছিল কি? সে জবাব মেলেনি। ফাল্গুনীর বাড়ি নৈহাটির সুভাষপল্লির কুলিয়াগড়ে। বিজেপির নেতাদের একাংশের অভিযোগ, দিন দু’য়েক আগে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন ছিল। ঠিক ছিল, ভোটাভুটি করে সভাপতি নির্বাচন হবে। কিন্তু তা না করে ফাল্গুনী নিজের বাড়িতে বসেই সব ক’টি মণ্ডল সভাপতির নাম ঠিক করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দেন। সেই রোষেই বিজেপির কর্মীরা ফাল্গুনীর বাড়ি ভাঙচুর করেছে বলে দলের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে।

Advertisement

ফাল্গুনী অভিযোগ মানেননি। তিনি জানান, দলের নেতাদের মতামত নিয়েই মণ্ডল সভাপতি নির্বাচন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১টা নাগাদ শতাধিক লোক ফাল্গুনীর বাড়ির সামনে জড়ো ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে থাকে। ইট-পাথর ছোড়ে। কিছু লোক বাড়ির মধ্যে ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। ফাল্গুনী বলেন, “আমি তখন বাড়িতে কয়েক জন নেতার সঙ্গে বৈঠক করছিলাম। ওরা আমাদের উপরে চড়াও হয়। কয়েক জন মণ্ডল সভাপতিকে মারধর করা হয়েছে। মোবাইল ফোন এবং ঘরের অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করা হয়। এক মণ্ডল সভাপতিকে তুলে নিয়ে চলে যায় হামলাকারীরা। অভিযোগ, ফাল্গুনীর বাড়ির সামনে রাখা কয়েকটি গাড়ি এবং মোটরবাইকেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ঘটনার পরে চার জনকে নৈহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

ফাল্গুনী বরং বলেন, “যাঁরা দীর্ঘ দিন দলের সঙ্গে রয়েছেন, মণ্ডল সভাপতি নির্বাচনে তাঁদেরই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি মনে করেন, তিনি দীর্ঘ দিন ধরে রয়েছেন বলে তাঁকেই পদে রাখতে হবে, সেটা যেমন মানা হয়নি, তেমনই কেউ দলে নতুন এসেছে বলে ভাল কাজ করলেও তিনি পদ পাবেন না— এমন নয়।”

গোলমালের জন্য বিজেপি নেত্রী দায়ী করেছেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসা লোকজনকে। তাঁর কথায়, “বিজেপিতে মিশে থাকা তৃণমূলের লোকেরাই এটা করেছে।”

বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেননি অর্জুন। ফোন ধরেননি, জবাব দেননি এসএমএসেরও। ঘটনার পরে কি বিষয়টি নিয়ে সাংসদের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে? ফাল্গুনী বলেন, “না, অর্জুনদার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement