প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্ত রোগীকে কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স চালককে ফোন করেছিলেন অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার। অভিযোগ, চালক ফোন ধরেননি। ফোনের সুইচ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তিনি অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে আসেনওনি।
২ অগস্ট রাতের ওই ঘটনায় চারিদিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে দফতরের সর্বোচ্চ আধিকারিকের ফোন যদি অধস্তন কর্মী না ধরেন, তা হলে দফতরের ঢিলাঢালা ভাবই প্রকাশ পায় বলে স্থানীয় মানুষের মত।
শুক্রবার প্রবোধ বলেন, ‘‘ওই চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাঁকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’’
তবে এই ঘটনায় বিতর্ক থামছে না। করোনা আক্রান্ত রোগীদের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যেতে পুরসভা জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুল্যান্স ও চালকের ব্যবস্থা করুক— এই দাবি উঠেছে। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, পুরসভার ৩টি অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে। একটি অ্যাম্বুল্যান্স করোনা রোগীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা হয়। পুরসভায় ২ জন স্থায়ী অ্যাম্বুল্যান্স চালক আছেন। বাকি কয়েকজন অস্থায়ী। করোনা রোগীদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থায়ী চালকদের কাজে লাগানো হয়। পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘দু’জন স্থায়ী চালকের মধ্যে শারীরিক কারণে একজন পিপিই পরতে পারেন না। অন্যজন রোগী নিয়ে যান। ভবিষ্যতে যাতে দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স পেতে অসুবিধা না হয়, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
অশোকনগরের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘অ্যাম্বুল্যান্স-কাণ্ড প্রমাণ করছে, কী রকম ভাবে চলছে পুরসভার কাজ। শিয়রে যখন মৃত্যুর হাতছানি, তখন পুরসভার গয়ংগচ্ছ মনোভাব শহরবাসীর বিপদ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।’’ রাস্তাঘাটে নিকাশি নালায় নোংরা আবর্জনা যত্রতত্র পড়ে থাকছে, ডেঙ্গির আশঙ্কা বাড়ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। রাস্তাঘাটের অবস্থাও ভাল নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রবোধ বলেন, ‘‘ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রতিটি ওয়ার্ডে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার কর্মসূচি চলছে। নিয়মিত মশা মারা তেল, ব্লিচিং, চুন ছড়ানো হচ্ছে। মশা মারা কামান দাগা হচ্ছে। পুরসভা এলাকার আয়তন ৩০.৫ স্কোয়ার কিলোমিটার। বৃষ্টিতে কোথাও জল জমলে দ্রুত সরানো হচ্ছে। অতিরিক্ত ৫০ জন শ্রমিক নিয়োগ করা হয়েছে।’’
করোনা মোকাবিলা সব রকমের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি করে পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘শহরের একশো শতাংশ মানুষ এখনও সচেতন হননি। সরকার কয়েক দিনের মধ্যে সেফ হোম চালু করবে। অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে কোভিড হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।’’