ভরপেট: ত্রাণশিবিরে শিশুরা। কুলতলির দেউলবাড়িতে। ছবি: সমীরণ দাস।
সরকারের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী বিলি নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির দাবি, তাদের সমর্থক হওয়ায় দুর্গত অনেক পরিবারকে ত্রাণ দিচ্ছেন না স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। গোসাবার রাঙাবেলিয়া পঞ্চায়েতের জটিরামপুরে এমন ঘটনা ঘটছে বলে দাবি বিজেপির। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও (গোসাবা) সৌরভ মিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসে গোসাবা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে নদীর নোনা জলে। বিদ্যাধরী, গোমর, দুর্গাদোয়ানি, গাড়াল-সহ বিভিন্ন নদীর বাঁধ ভেঙে একের পরে এক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দুর্যোগের পরে ১০ দিন কেটে গেলেও এখনও বহু মানুষ বাড়ি ফিরতে পারেননি। বহু জায়গা এখনও জলমগ্ন। অনেকেই নদীর বাঁধে প্লাস্টিকের ছাউনি খাটিয়ে কোনওমতে দিন কাটাচ্ছেন।
দুর্গতদের একাংশের অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে জড়িত বলে তাঁদের ত্রাণ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। জটিরামপুরের বাসিন্দা ঊর্মিলা মণ্ডলের দাবি, “আমার জামাই বিজেপি করে। এটাই আমার অপরাধ। ঘর জলে ভেসে গেলেও ত্রিপল পাইনি। কোনও সরকারি সাহায্য পাইনি। অথচ, অনেক পরিবার তিনটি করে ত্রিপল পেয়েছে।” একই অভিযোগ লক্ষ্মী সর্দারের। তিনি বলেন, “ক্ষতি সকলের হয়েছে। আমরা সরকারি সাহায্য পাচ্ছি না বিজেপি করি বলে।”
বিজেপির দক্ষিণ ২৪ পরগনা পূর্ব সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুনীপ দাসের অভিযোগ, “বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দলীয় কর্মীদের আয়লার চাল বন্ধ করে দেওয়া রয়েছে। আমপানের সময় বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের ক্ষতিপূরণের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। সরকারি ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করছে তৃণমূল।”
পক্ষান্তরে, গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা কৈলাস বিশ্বাসের দাবি, “ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সব দুর্গত মানুষ যাতে সরকারি ত্রাণ ও খাবার পান, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা এসে বাস্তব চিত্র দেখে যান।” বিডিও-র প্রতিক্রিয়া, “এই ধরনের কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। ব্লক প্রশাসন পর্যাপ্ত ত্রাণ ও খাবারের ব্যবস্থা করেছে। কেউ না পেয়ে থাকলে হেল্পলাইনে ফোন করে জানান। তাঁদের কাছে সমস্ত সরকারি সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমার।”