ফাইল চিত্র।
পেট্রাপোল বন্দরে তল্লাশির নামে বিএসএফ জওয়ানেরা ট্রাক চালক, খালাসি-সহ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে হেনস্থা করছেন, এক একটি ট্রাক তল্লাশি করতে প্রায় ১০ মিনিট সময় নেওয়া হচ্ছে, ফলে গতি কমে যাচ্ছে রফতানির— এমনটাই অভিযোগ উঠল।
প্রতিবাদ জানাতে সোমবার সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করেন, ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, ট্রান্সপোর্ট, ট্রাক মালিক, শ্রমিক-সহ বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি সংগঠন। বন্দর এলাকায় তাঁরা প্রতিবাদ সভাও করেন। কর্মবিরতির জেরে এ দিন সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পণ্য রফতানি বন্ধ থাকে। পরে বিএসএফের পক্ষে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে কর্মবিরতি তুলে নেওয়া হয়। শুরু হয় রফতানির কাজ।
ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠন সূত্রে অভিযোগ, বন্দর এলাকায় ট্রাক চালক, খালাসিদের পোশাক পর্যন্ত খুলে তল্লাশি করা হচ্ছে। এতদিন যে সব ট্রাক চালক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে যেতেন, তাঁরা খাওয়াদাওয়া, শৌচকর্মের জন্য বেনাপোলে ট্রাক রেখে এদেশে চলে আসতেন নিজেদের প্রয়োজন মতো। কিন্তু এখন বিকেল পাঁচটার আগে তাঁদের এদেশে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে চালক খালাসিদের বেনাপোল বন্দরের বাইরে যেতে দেওয়া হয় না। পণ্য খালি না হওয়া পর্যন্ত ট্রাকের ভিতরে থাকতে হয়। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন তাঁরা।
ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, " যে ট্রাক চালক সকাল ১০টার সময় বেনাপোলে যাচ্ছেন, তাঁদের বিকেল পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।"
তাঁর দাবি, ট্রাক দ্রুত তল্লাশি করতে হবে। আগে রোজ প্রায় ৪০০ ট্রাক বেনাপোলে যেত। বেশি সময় ধরে তল্লাশির জেরে এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩০০-৩৫০টি ট্রাকে। সমস্যা মেটাতে বিএসএফ শুল্ক-সহ বিভিন্ন দফতরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তারপরও সমস্যা মেটেনি। তাই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, পেট্রাপোল বন্দরে আসা অনেক ট্রাকের রেজিস্ট্রেশন নম্বর ভুয়ো থাকে। চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স বৈধ থাকে না। ফলে তল্লাশি করতে সময় লাগে। বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রাকে করে বেআইনি ভাবে দু'দেশের মধ্যে বিভিন্ন জিনিসপত্র পাচার হয়। সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাক থেকে জওয়ানেরা পাচারের মালপত্র উদ্ধার করেছে। ফলে তল্লাশি বাড়াতে হয়েছে।
ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠন সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন বিএসএফ কর্তৃপক্ষ তাঁদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, ট্রাকে তল্লাশির জন্য কর্মীসংখ্যা বাড়ানো হবে। আধুনিক যন্ত্রপাতি কাজে লাগানো হবে। এতে সময় কম লাগবে। ট্রাক ও চালকদের বৈধ নথিপত্র রাখতে হবে।
কার্তিক বলেন, " আমরাও অসাধু কাজকর্ম বন্ধ করতে পদক্ষেপ করব। বিএসএফকে সহযোগিতা করব।" সেন্ট্রাল ওয়্যার হাউজ় কর্পোরেশনের ম্যানেজার সুপ্রভাত বলেন," কিছু সমস্যা তৈরি হয়েছে। বিএসএফ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।"