সিপিএম কর্মীকে অন্তর্বাস পরিয়ে ঘোরানোর অভিযোগ

সিপিএম সমর্থক ৭৪ বছরের বৃদ্ধকে অন্তর্বাস পড়িয়ে বাজারের মধ্যে ঘোরানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাড়োয়া থানার সোনাপুকুর-শঙ্করপুর পঞ্চায়েতের ঝাঁড়াতলা বাজার এলাকায়। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৬ ০৩:২১
Share:

মণিমোহন মণ্ডল।

সিপিএম সমর্থক ৭৪ বছরের বৃদ্ধকে অন্তর্বাস পড়িয়ে বাজারের মধ্যে ঘোরানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে হাড়োয়া থানার সোনাপুকুর-শঙ্করপুর পঞ্চায়েতের ঝাঁড়াতলা বাজার এলাকায়। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। মণিমোহন মণ্ডল নামে ওই বৃদ্ধ হাড়োয়া থানায় চার জন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযোগ মিলেছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মণিমোহনবাবুর বাড়ি সোনাপুকুর-শঙ্করপুর পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর গ্রামে। শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ মোটরবাইকে করে হাড়োয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। সিপিএমের অভিযোগ, সেই সময়ে দু’টি মোটরবাইকে ৬ জন তাঁর পিছু নেয়। স্থানীয় গাঁড়াগড়ি মোড়ে তাঁকে গালিগালাজ করা হয়। তার পর ওই বৃদ্ধকে ঝাঁড়াতলা বাজারে নিয়ে গিয়ে লাথি মেরে ফেলে দেওয়া হয় এবং মোটরবাইকের চাবি কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মণিমোহনবাবুর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম করার জন্য আমার কাছে জরিমানার টাকা চাওয়া হয়। টাকা দিতে না পারায় জুতো এবং ধুতি খুলে নিয়ে আমাকে অর্ধনগ্ন অবস্থায় বাজারে ঘোরানো হয়েছে। জল কাদায় মধ্যে দিয়ে দৌড়তে হয়েছে। অসুস্থ লাগছে বললেও রেহাই মেলেনি।’’

Advertisement

যদিও তৃণমূলের হাড়োয়া ২ ব্লক সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় মণ্ডলের পাল্টা দাবি, গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে মণিমোহনবাবু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কটু কথা বলেছিলেন। এ দিন স্থানীয় কয়েকজন তাঁকে দেখতে পেয়ে তিনি ওই কথা কেন বলেছিলেন সেটা জানতে চান। তখনই মোটরবাইক ফেলে পালান তিনি। তার পর তৃণমূল কর্মীরাই পুলিশ ডেকে মোটরবাইকটি তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মণিমোহনবাবু আগে তৃণমূল করতেন। স্থানীয় সোনাপুর স্কুলের পরিচালন সমিতির সম্পাদকও ছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদ মাথাচাড়া দেয় হাড়োয়ায়। মণিমোহনবাবুর পরিবারের সদস্যদের উপরে তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাঁর মেছোভেড়ির চাষ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মণিমোহনবাবুর দাবি, ওই সময়ে তৃণমূলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বার বার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তার পর তিনি সিপিএমে যোগ দেন। গত বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর থেকেই মণিমোহনবাবু এবং তাঁর পরিবারের উপর হামলা হচ্ছে বলে অভিযোগ।

সিপিএমের হাড়োয়া লোকাল কমিটির সম্পাদক দীনবন্ধু মণ্ডলের দাবি, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই হাড়োয়া জুড়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চলছে। একজন সত্তোরোর্ধ্ব বৃদ্ধ যে দলই করুন না কেন তাঁকে প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরিয়ে ঘোরানোর ঘটনার ধিক্কার জানানোর ভাষা নেই। তৃণমূল নেতারা যদি দলের কর্মীদের সামলাতে না পারেন তা হলে এরকম আরও ঘটনা ঘটবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement