নজরদারি চালাচ্ছে পুলিশ। ছবি: সামসুল হুদা
এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভাঙড়ে ১৪৪ ধারা জারি করল প্রশাসন। শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এলাকায় রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে কলকাতায় এক সমাবেশের আয়োজন হয়েছিল। ভাঙড়-সহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আইএসএফ কর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে যোগ দিতে যাওয়ার পথে হাতিশালায় আইএসএফ কর্মীদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পাল্টা হাতিশালা এলাকায় তৃণমূলের তিনটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী এলাকায় এলে তৃণমূলের লোকজন তাঁর গাড়িতে হামলা চালায় বলেও অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে আইএসএফ ধর্মতলায় বিক্ষোভ দেখাতে গেলে নওশাদ-সহ ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ভাঙড়, কাশীপুর ও কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকা থেকে আরও ৫১ জন আইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বহু আইএসএফ কর্মী ঘরছাড়া বলে অভিযোগ। ঘটনার পর থেকেই থমথমে ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকা। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে যাতে গোলমাল না বাধে, তার জন্যই ভাঙড় ১ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
বারুইপুরের মহকুমা শাসক সুমন পোদ্দার বলেন, “ভাঙড়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। যতক্ষণ না পরিবেশ শান্ত হচ্ছে, ততক্ষণ ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।”
নওশাদ সিদ্দিকীর মুক্তি-সহ বিভিন্ন দাবিতে মহম্মদ সেলিম, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, শমীক লাহিড়ীর নেতৃত্বে ঘটকপুকুরে সিপিএমের মিছিল হওয়ার কথা ছিল সোমবার। ১৪৪ ধারা প্রয়োগের কারণে আপাতত ওই কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তুষার ঘোষ বলেন, “শাসক দল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের মিছিল বানচাল করতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। এটা গণতন্ত্র বিরোধী। ১৪৪ ধারা জারি করার মতো পরিস্থিতি ভাঙড়ে তৈরি হয়নি। জনমত দমিয়ে রাখার জন্য এবং বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করতে এসব করা হচ্ছে। এসব বেশিদিন চলতে পারে না।”
আইএসএফের জেলা সভাপতি আব্দুল মালেক মোল্লা বলেন, “ভাঙড়ের মানুষ শাসক দলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। বিরোধীদের দমিয়ে রাখতে অন্যায় ভাবে বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারি করে ভাঙড়ের মানুষকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে মানুষ এর জবাব দেবেন।
ভাঙড় ১ (এ) ব্লক তৃণমূলের সভাপতি কাইজার আহমেদ বলেন, “কারা গন্ডগোল করছে তা ভাঙড়ের মানুষ জানেন। সেদিন হাতিশালায় কারা আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল এবং আমাদের নেতাকে মারধর করেছিল তা মানুষ দেখেছেন। ওরা নতুন করে এলাকা অশান্ত করতে চাইছে। সেই কারণে প্রশাসন ১৪৪ জারি করেছে। আমাদেরও কোনও কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না।”