বচসায় জড়ালেন অগ্নিমিত্রা। ছবি: সমরেশ মণ্ডল
ট্রেন দুর্ঘটনায় কাকদ্বীপে মৃত ও নিখোঁজদের বাড়ির লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। ‘গো ব্যাক’ শ্লোগান দেওয়া হয়। রবিবার দুপুরে কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর পঞ্চায়েত এলাকার ঘটনা। পরে এক মৃতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যান তিনি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে কাকদ্বীপের শিবকালীনগর এলাকায় বিজেপি নেত্রী যাওয়ার সময়ে তাঁর গাড়ি আটকে বেশ কয়েক জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বিক্ষোভ দেখান। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি ওঠে। তৃণমূল সমর্থকদের সঙ্গে বচসায় জড়ান অগ্নিমিত্রা। স্থানীয় হারউড পয়েন্ট উপকূল থানার পুলিশের সঙ্গেও কথা কাটাকাটি হয় তাঁর।
পরে মধুসূদনপুর পঞ্চায়েত এলাকায় আরও কিছু জায়গায় রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। তবে দলীয় পতাকা ছিল না। নেতৃত্বে ছিলেন কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রিনা দাস। তৃণমূলের দাবি, এলাকার বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ। তা নিয়ে স্থানীয় মানুষ চিন্তিত। এর মধ্যে এলাকায় রাজনীতি করতে এসেছিলেন অগ্নিমিত্রা। তাই এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। এক সময়ে গাড়ি থেকে নেমে দেড় কিলোমিটার হেঁটে মৃত বুদ্ধদেব বাগের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ফিরে যান অগ্নিমিত্রা।
ঘটনাস্থলে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল বলে অভিযোগ বিজেপির। বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন অগ্নিমিত্রা। তিনি বলেন, ‘‘নিখোঁজ ও মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এসেছিলাম। কিন্তু তৃণমূল বাধা দিয়েছে। একশো দিনের কাজের টাকা কেন কেন্দ্র দেয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অহেতুক বিক্ষোভ দেখিয়েছে। আমার প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী কেন এ রাজ্যে ওই যুবকদের কাজ দিতে পারলেন না? কেন ভিন্ রাজ্যে কাজে গিয়েছিলেন ওঁরা?’’ অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, তাঁর সঙ্গে থাকা বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হয়েছে। বাইক কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
কাকদ্বীপের বিজেপি নেতা গোপালকৃষ্ণ দাস বলেন, ‘‘ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত ও নিখোঁজদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে আমাদের নেত্রী এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তৃণমূল রাজনীতি করার জন্য ইচ্ছে করে ঝামেলা পাকায়। আমাদের কর্মীদের মারধর করে।’’
রিনা বলেন, ‘‘এলাকার বিধায়ক সকলের পাশে আছেন। ওঁরা রাজনীতি করতে এখানে এসেছে। কেন্দ্র সরকার ট্রেন-ব্যবস্থা ভাল না করায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।’’ বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ মানেনি রিনা। বিধায়ক মন্টুরাম পাখিরার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি।
কাকদ্বীপের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধায়ক এলাকায় আসার আগাম কোনও খবর আমাদের কাছে ছিল না। এলাকায় ঢোকার মুখে স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখানে পুলিশ সহযোগিতা করেছে। নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ছিল না।’’