এক চামচ ঘি হাতের তালুতে রাখুন। দেহের তাপমাত্রায় তা গলে গেলে বুঝবেন ঘি আসল।
শান্তিপুর থেকে আনা হচ্ছিল প্রচুর ভেজাল ঘি। খবর পেয়ে বুধবার রাতে বনগাঁ শহর থেকে প্রচুর সেই ঘি-বোঝাই গাড়ি ধরে ফেলল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে এক ব্যক্তিকে। গাড়িটিও আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০টি টিনের ড্রামে ৩২০ কেজি ভেজাল ঘি আনা হয়েছিল। বনগাঁ থানার আইসি সতীনাথ চট্টরাজ জানিয়েছেন, বনগাঁ শহরের একটি দোকানে ওই ঘি পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল। তারপর সেখান থেকে ভেজাল ঘি বিভিন্ন এলাকায় দোকানে দোকানে পাঠিয়ে দেওয়া হত। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।
অতীতে ভোজন প্রিয় বাঙালির রসনার অন্যতম উপাদান ছিল ঘি। গরম ভাতের সঙ্গে ঘি-লঙ্কা খাওয়ার চল ছিল। কিন্তু খাঁটি ঘিয়ের অভাবে বহু দিন হল অনেকে সে অভ্যাস ছেড়েছেন। প্রবীণ মানুষেরা জানালেন, তাঁদের ছোটবেলায় গাওয়া ঘিয়ের স্বাদই ছিল আলাদা। দীর্ঘক্ষণ মুখে স্বাদ লেগে থাকত। ঘি দিয়েই এক থালা ভাত খাওয়া হয়ে যেত। ইদানীং যে সব বোতল-বন্দি ঘি পাওয়া যায়, তাতে সেই স্বাদ নেই। নামী-দামি সংস্থার ঘি-ও খেয়ে সুখ হচ্ছে না।
অতীতে বহু বাড়িতেই দুধের সর জ্বাল দিয়ে ঘি তৈরির চল ছিল। বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, ঘি হচ্ছে পরিশোধিত মাখন। দুধ জ্বাল দেওয়ার পরে ঘণ্টা তিনেক সময় রেখে দিতে হয়। সর বসে গেলে তা থেকে দক্ষ হাতে তৈরি হয় ঘি।
কিন্তু এখন বেশি লাভের জন্য কারবারিরা ঘিয়ের সঙ্গে ডালডা, রিফাইন তেল, বাটার অয়েল মিশিয়ে দিচ্ছে। তা ছাড়া, খাঁটি দুধও পাওয়া শক্ত। ভেজাল দুধ দিয়ে তৈরি হচ্ছে ভেজাল ঘি। বিশেষজ্ঞরা জানালেন, বাড়িতে রাখা ঘিয়ের শিশি ভাল করে খেয়াল করলেই দেখা যাবে, জারের নীচে ঘি এর আস্তরণ। আর উপরে তৈলাক্ত আবরণ। খাঁটি ঘিয়ে এমনটা হয় না। পুরোটাই তরল থাকার কথা।
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক গোপাল পোদ্দার বলেন, ‘‘ভেজাল ঘি আমাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ তৈরি করে। তা থেকে ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ-সহ নানা রোগ হতে পারে।’’