প্রতীকী ছবি।
ভিনরাজ্যে কাজ করতে বর্তমানে প্রয়োজন হচ্ছে করোনা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ শংসাপত্র। একদিকে যেমন কর্মস্থলে এই শংসাপত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, অন্য দিকে ভিনরাজ্যে যাতায়াতের জন্য ট্রেন, প্লেন বা জাহাজের টিকিট কাটতে গেলেও প্রয়োজন হচ্ছে এই শংসাপত্রের। যা না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন গোসাবার বহু পরিযায়ী শ্রমিক। করোনার ভ্যাকসিনের জোগান কম থাকায় এখনও গ্রামগঞ্জের বহু এলাকায় ভ্যাকসিন পাননি অনেকে। এই পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ পরিযায়ী শ্রমিক ইচ্ছে থাকলেও ভ্যাকসিন না পাওয়ায় কর্মস্থলে যেতে পারছেন না। বিষয়টি জানতে পেরে এঁদের দ্রুত ভ্যাকসিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, বর্তমানে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ গোসাবার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তামিলনাড়ু, কেরল, মহারাষ্ট্র, আন্দামান-সহ বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে যান। সরকারি হিসেবে, গোসাবা ব্লকের ১৩ হাজার ৬৪০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের মধ্যে মাত্র হাজার চারেক ভ্যাকসিন পেয়েছেন। লকডাউনের সময় থেকে বেশিরভাগ পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। তবে ধীরে ধীরে আবার সকলে নিজেদের কর্মস্থলে ফিরতে চাইছেন। এঁরা যাতে দ্রুত করোনার ভ্যাকসিন পান, সে দিকে ব্লক প্রশাসনকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
গোসাবার রাঙাবেলিয়ার বাসিন্দা রবিন সর্দার, নিতাই মণ্ডলরা জানান, এলাকায় একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। চাষবাস আপাতত সবই বন্ধ। ফলে ভিনরাজ্যে কাজে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে এ জন্য ভ্যাকসিনের শংসাপত্র প্রয়োজন। টিকা না পাওয়ায় শংসাপত্র পাননি বলে জানালেন তাঁরা।
দিন কয়েক আগে ক্যানিংয়ে মহকুমাশাসকের দফতরে গোসাবার জলমগ্ন পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক। সেখানে গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অচিন পাইক জেলাশাসককে পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যার বিষয়টি জানান। এরপরেই জেলাশাসক ব্লকের সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকেরা যাতে ভ্যাকসিন পান, সেই ব্যবস্থা করতে ব্লক প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে গোসাবা ব্লক প্রশাসন। পঞ্চায়েতগুলিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে গোসাবা ব্লকে ভ্যাকসিনের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। প্রতিদিন ৩ হাজার মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘টিকাকরণ শুরু হয়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভ্যাকসিন গ্রহণ কেন্দ্রে গেলেই তাঁদের প্রয়োজনমতো প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ়ের টিকা দেওয়া হচ্ছে।”