হিমঘর তৈরির জন্য জমি দিচ্ছেন এঁরা। ছবি: সামসুল হুদা
সরকারি চুক্তি অনুযায়ী ভাঙড়ে হিমঘর তৈরির জন্য অবশেষে জমি কেনা শুরু করল প্রশাসন। দাবি মতো কাজ শুরু হওয়ায় শুক্রবার পাওয়ার গ্রিডের গেটের তালা খুলে দিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে নেয় ভাঙড়ের জমি কমিটি।
এদিন ভাঙড় সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে হিমঘর তৈরির জন্য প্রশাসনিক ভাবে জমি কেনার কাজ শুরু হয়েছে। মহম্মদ আব্দুস সামাদ, ইসরাবুল ইসলাম, সাদ্দাম হোসেন ও হাবিবুর রহমান তাঁদের প্রায় ৩৩ শতক জমি ৪৮ লক্ষ টাকায় রেজিস্ট্রি করে দেন। বিকেলের দিকে পাওয়ার গ্রিডের গেটের তালা খুলে দেয় জমি কমিটি। চারদিনের অবস্থান-বিক্ষোভও তুলে নেয়।
যদিও জমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক মির্জা হাসান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘অবস্থান-বিক্ষোভ সাময়িক ভাবে তুলে নেওয়া হচ্ছে। মঙ্গলবারের মধ্যে হিমঘর তৈরির জন্য সমস্ত জমি কেনার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। এ ছাড়া, চুক্তি অনুযায়ী অন্যান্য কাজ কবে সমাপ্ত করা হবে, তা নিয়ে আগামী সপ্তাহে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে সমস্ত প্রকল্প শেষ করার লিখিত ডেটলাইন জানাতে হবে। তা না হলে আমরা আবার আন্দোলনে নামব। পাওয়ার গ্রিডের সমস্ত রুটিন কাজ বন্ধ করে দেব।’’
সরকারি চুক্তি অনুযায়ী দাবি পূরণ না হওয়ায় মঙ্গলবার পাওয়ার গ্রিডের গেটে তালা লাগিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে জমি কমিটি।
বুধবার বারুইপুরে মহকুমাশাসকের দফতরে জমি কমিটির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেন জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা, বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার শ্রীমতি পুষ্পা-সহ অন্যান্য দফতরের পদস্থ কর্তারা। বৈঠকে জমি কমিটির সদস্যেরা দাবি করেন, চুক্তি অনুযায়ী অধিকাংশ কাজ শেষ হয়নি। যতক্ষণ না সরকারি চুক্তি অনুযায়ী বাকি কাজ শুরু হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে।
এরপরেই ভাঙড়ে হিমঘর তৈরির জন্য বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায়কে জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেন জেলাশাসক। এ জন্য ১.৫৬ একর জমি চিহ্নিতকরণ হয়েছে। প্রায় ২ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।
জমিদাতা মহম্মদ আব্দুস সামাদ, ইসরাবুল ইসলামরা জানান, এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে বাজার দরের থেকে বেশ কিছুটা কম দামে জমি বিক্রি করছেন। এলাকায় হিমঘর তৈরি হলে ভাঙড়ের চাষি থেকে শুরু করে ভাঙড়, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, রাজারহাট-সহ শহর ও শহরতলির চাষিরা খুবই উপকৃত হবেন বলে তাঁদের আশা।
বিডিও বলেন, ‘‘আজ প্রথম দফায় চারজন জমিদাতা হিমঘর তৈরির জন্য জমি রেজিস্ট্রি করেছেন। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে অন্যান্য জমিদাতারা তাঁদের জমি রেজিস্ট্রি করে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তা ছাড়া, সরকারি চুক্তি অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণের ১২ কোটি টাকার মধ্যে বকেয়া ২৫ লক্ষ টাকা দ্রুত তুলে দেওয়া হবে।’’