টান: গত কয়েক দিনে মুরগির বাজারে কমছে ক্রেতা। নিজস্ব চিত্র।
বার্ড ফ্লু সংক্রমণের চেয়ে দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে তাকে কেন্দ্র করে গুজব আর আতঙ্ক। তাতেই মাথায় হাত মুরগি ব্যবসায়ীদের। কমেছে বিক্রি। কমেছে দামও। প্রতি কিলোগ্রামে দাম কমেছে গড়ে ৩০-৪০ টাকা।
ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাটের বাদুড়িয়ায় কয়েক হাজার মুরগির খামার রয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার মানুষ কাজ করেন। বড় ব্যবসায়ীরা মুরগির বাচ্চা এবং খাবার খামারে পাঠান। মুরগি বড় করার পর চাষিরা টাকা পান। আমপানের ফলে ২-৩ হাজারের বেশি খামার ভেঙে গিয়েছিল। ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন ব্যবসায়ী ও চাষিরা। সেই ক্ষত শুকিয়ে উঠতে না উঠতেই হাজির হল বার্ড ফ্লু এবং তাকে কেন্দ্র করে গুজব। রাজ্যে এখনও সংক্রমণের খবর মেলেনি। তবু বাজারে পড়ছে প্রভাব। এ দিন বাদুড়িয়ায় গিয়ে দেখা গেল, কোনও কোনও ব্যবসায়ী মুরগি বিক্রি হচ্ছে না বলে দোকান বন্ধ করে বসে রয়েছেন। বৈদ্যনাথ মণ্ডল, কার্তিকচন্দ্র মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘বার্ড ফ্লুর কথা জানাজানি হওয়ায় এখন আর বিশেষ কেউ মুরগির মাংস খেতে চাইছেন না। ফলে গত দু’দিন আগেও যেখানে ১৯০-২০০ টাকা কেজি দরে মুরগির মাংস বিক্রি করেছিলাম তা বর্তমানে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। দিনে যেখানে দুশো কেজির উপর মুরগির মাংস বিক্রি করতাম, তা কমে ৫০-৬০ কেজিতে এসে দাঁড়িয়েছে।’’
প্রশাসন অবশ্য সতর্ক। বাদুড়িয়ার প্রাণিসম্পদ আধিকারিক মহম্মদ কেতাব আলি বলেন, ‘‘দেশের কয়েকটি রাজ্যে বার্ড ফ্লু দেখা দিয়েছে। সে কথা জানাজানি হওয়ায় মুরগি বিক্রি কম হলেও আমরা বিষয়টির উপর সজাগ থেকে লক্ষ্য রাখছি। প্রাণিবন্ধু, প্রাণিসেবী, প্রাণিমিত্রদের বলা হয়েছে, কোনও ফার্মে মুরগির অস্বাভাবিক মৃত্যু হলেই তা জানাতে।’’ এর পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, ‘‘বার্ড ফ্লুর আশঙ্কায় ভীত না হয়ে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির প্রাণী ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ প্রতাপউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘একে করোনার ভয়, তার উপরে বার্ড ফ্লুর কথা শুনে ভয়ে অনেকে মুরগি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। আতঙ্ক কাটাতে মোবাইল এবং মাইকের মাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’