ফাইল চিত্র।
‘ভুল স্বীকার করে’ পুরনো দলে ফিরলে আব্দুর রহিম দিলুকে গ্রহণ করতে আপত্তি নেই কংগ্রেসের, বুধবার বাদুড়িয়ায় এসে এ কথা জানিয়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী।
সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া দিলুর গড়ে দাঁড়িয়ে তাঁকে ‘বেইমান’, ‘কুলাঙ্গার’ বলে তুলোধনা করতে অবশ্য ছাড়েননি কংগ্রেস নেতারা।
বাদুড়িয়ার প্রবাদপ্রতিম প্রয়াত কংগ্রেস নেতা আবদুল গফ্ফরের ছেলে আব্দুর রহিম দিলু কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বাদুড়িয়ার বিধায়ক হন। তাঁর হঠাৎ করে তৃণমূলে যোগ দেওয়াটা একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না কংগ্রেস। তিনি দল বদলের পরে গফ্ফর সাহেবের তৈরি কংগ্রেস পার্টি অফিসে তৃণমূলের পতাকা উড়েছে। রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নন এমন অনেকেও বিষয়টির সমালোচনা করেন।
এই ঘটনার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বাদুড়িয়ায় মিছিল এবং সভা করার সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার দিলীপ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের মাঠে ছিল সেই সভা।
এ দিনের সভায় ভিড় দেখে দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত অধীর বলেন, ‘‘গফ্ফরের ছেলে না থাকলে কী হবে, এখানে উপচে পড়া ভিড় আমাকে হতবাক করেছে। মনে রাখতে হবে, কর্মীরাই কিন্তু নেতা তৈরি করেন।’’
অধীর বলেন, ‘‘ছোট ভাইয়ের মতো ভালবাসতাম বলে দিলুকে বাদুড়িয়ায় প্রার্থী করেছিলাম। তৃণমূলে যখন সূর্য ডুবছে, সে সময়ে সূর্যের উদয় ঘটাতে দিলু চললেন তৃণমূলে।’’ অধীর বলেন, ‘‘গফ্ফরের পীঠস্থানে দুশমনদের সঙ্গে হাত মেলালো (দিলু)। বাদুড়িয়ার মানুষকে বাদ দিয়ে দিদির উপরে ভরসা করল। মনে রাখতে হবে, দিদি কেবল তাঁর ভাইপোকে বাঁচানোর জন্য আছেন। দিলুকে ব্যবহার করে ফেলে দেবেন।’’ প্রদেশ সভাপতির কথায়, ‘‘এখনও সময় আছে, বাদুড়িয়ার মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে কংগ্রেসে ফিরে আসুন (দিলু)। কংগ্রেস আপনাকে গ্রহণ করবে।’’
এ দিন অধীরের সঙ্গে এসেছিলেন দলের নেতা আব্দুল মান্নান, আব্দুর সাত্তার, অমিত মজুমদাররা। গফ্ফর সাহেবের প্রসঙ্গ টেনে তাঁর ছেলের কড়া সমালোচনা করেন নেতারা। মান্নান বলেন, ‘‘বেইমান, বিশ্বাসঘাতক একদিন শাস্তি পাবেই। কুলাঙ্গার, মিরজাফরকে বাদুড়িয়ার মানুষ কোনও দিন ক্ষমা করবে না।’’
জেলা (গ্রামীণ) কংগ্রেসের সভাপতি অমিত মজুমদার জানান, দিলুর লোকেরা কংগ্রেসের যে পার্টি অফিস থেকে পতাকা খুলে তৃণমূলের পতাকা লাগিয়েছিল, পুলিশের মধ্যস্থতায় সেই পতাকাও নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ঘরে কংগ্রেসের দফতর ছিল, সেই ঘরের মালিককে ভাড়া মিটিয়ে দু’চার দিনের মধ্যে ফের সেখানে কংগ্রেস নেতারা বসবেন বলেও জানান তিনি। সভা শেষে কংগ্রেসের পার্টি অফিসের সামনে দিয়ে মিছিল করেন নেতারা।
দিলু পরে বলেন, ‘‘যাকে বেইমান বলা হচ্ছে, তাকেই আবার দলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা কেন? আসলে ওঁরা সব মানসিক অবসাদে ভুগছেন। তাই এ ধরনের মন্তব্য করছেন।’’