প্রতীকী ছবি।
খড়দহের ছায়া এ বার জগদ্দলেও। খুন করে দেহ লোপাট করতে গঙ্গায় ফেলার অভিযোগে এক যুবককে নিয়ে মঙ্গলবার জগদ্দলের বিভিন্ন ঘাটে তল্লাশি চালালেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা। কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম নকুল যাদব (৩৫)। জগদ্দলের পাওয়ার হাউস মোড়ের বাসিন্দা নকুল গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাড়ার মোড়ে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন।
তার পরে আর না ফেরায় পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।
উল্লেখ্য, খড়দহ থানা এলাকার প্রায় একই রকম একটি ঘটনা সম্প্রতি সামনে এসেছে। সেখানে এক বছর আঠারোর নিখোঁজ তরুণকে খুনের পরে তাঁর দেহ দু’টুকরো করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেওয়ার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে তরুণের দুই পরিচিত।
কিন্তু জগদ্দলের যুবকের কোনও হদিস না মেলায় ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগকে ঘটনাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) অজয় ঠাকুর নিজে তদন্ত শুরু করেন। নকুলের পরিচিত কারা ওই এলাকায় ঘটনার দিন থেকে থাকছেন না, কাদের সঙ্গে নকুলের সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল, সেই সব খোঁজ করতে করতে কানাই মিশ্র নামে এক যুবকের খোঁজ পান গোয়েন্দারা।
কানাইকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তার কথায় অসঙ্গতি মেলায় পুলিশ তাকে প্রথমে আটক করে। দিনকয়েক আগে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশের দাবি, যেহেতু এখনও ঘটনার একমাত্র সূত্র কানাই, তাই তদন্তের স্বার্থে তাকে হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল আদালতে। বিচারক সেই আর্জি মঞ্জুর করেছেন।
যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ দমন) বলেন, ‘‘বার বার প্রশ্ন করায় বিভিন্ন রকম জবাব দিচ্ছিল কানাই। এক সময়ে নকুলকে খুনের কথা স্বীকার করে সে। এই ঘটনায় আর কারা জড়িত সেটা যেমন দেখা হচ্ছে, তেমনই ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে খুন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তদন্তকারীদের দাবি, কানাইয়ের বক্তব্য, নকুলের পেট ছুরি দিয়ে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেওয়া হয়। গঙ্গায় ফেলার আগে তাঁর পেট কেটে ভরে দেওয়া হয় মাটি আর ইটের টুকরো। যাতে লাশ গঙ্গায় ভেসে না ওঠে। এর পরে মাঝগঙ্গায় নিয়ে গিয়ে দেহ ফেলে দেওয়া হয়। কোন ঘাট দিয়ে দেহটি মাঝগঙ্গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, এ দিন তার খোঁজেই পুলিশ তল্লাশি চালায়।