ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবারই ঘোষণা করেছেন, মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদ গড়বেন। উদ্বাস্তুদের পাট্টা দেওয়া হবে। মতুয়ারাও মূলত উদ্বাস্তু। পাট্টা পাওয়ার আশা তৈরি হয়েছে তাঁদেরও। পাট্টা দেওয়া মানেই তাঁদের নাগরিকত্ব প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই পরিস্থিতিতে শান্তনু বলছেন, ‘‘পাট্টা পরে হবে, আগে মুখ্যমন্ত্রী বলুন, কেন্দ্রের নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) তিনি সমর্থন করেন কিনা।’’ নয়া নাগরিকত্ব আইন দ্রুত চালু করার জন্য এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বনগাঁর সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের যুগ্ম সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। নাগরিকত্বের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করছেন মতুয়ারা। কেন্দ্রের নাগরিকত্ব আইন চালু হওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী পাট্টা দিয়ে যদি মতুয়া মন কেড়ে নেন, তা হলে বিপাকে পড়বেন বিপক্ষ শিবিরের সাংসদ শান্তনু। বৃহস্পতিবার তিনি ফোনে বলেন, ‘‘মতুয়াদের উন্নয়ন হোক, সেটা আমিও চাই। কিন্তু ভোটের আগে মতুয়াদের নিয়ে রাজনৈতিক খেলা আমি সমর্থন করি না। মতুয়াদের প্রকৃত উন্নয়ন কতটা হবে, তা আগামী দিনে মানুষ বুঝতে পারবেন। ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী রাজনৈতিক সমীকরণ করার জন্য এই ঘোষণা করলেন।’’
শান্তনুর কথায়, ‘‘ভোট এলেই মতুয়াদের ভিক্ষে দেওয়া বন্ধ হোক। কেবল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলছি না, কোনও রাজনৈতিক দল যেন মতুয়াদের নিয়ে না খেলেন। তাদের রাজনীতি বন্ধ হয়ে যাবে। মতুয়ারা ভিক্ষে চাইছেন না। তাঁদের ছোট একটা দাবি, নাগরিকত্ব।’’ শান্তনুর প্রশ্ন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আগে বলুন, তিনি সিএএ সমর্থন করেন কিনা। তারপরে পাট্টা দেবেন। সিএএ না হলে তো মতুয়ারা এ দেশে থাকতেই পারবেন না।’’ বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়াদের উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করে ১০ কোটি টাকা মঞ্জুর করেছেন। ১ লক্ষ ২৫ হাজার উদ্বাস্তু পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। পাট্টা পাওয়া মানে উদ্বাস্তু জীবনের নাগরিকত্ব বলেও জানিয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্যে এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার তাঁর একটি মতুয়া পরিবারে মধ্যাহ্নভোজন করার কথা। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রী ওই ঘোষণার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি মতুয়াদের ‘কাছের মানুষ।’ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন বনগাঁর প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতা ঠাকুরও। পাট্টা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘উদ্বাস্তুরা ভোটার। মানে তাঁরা এ দেশের নাগরিক। পাট্টা পেয়ে তাঁরা এ দেশে থাকার জায়গা পাবেন। অধিকার পাবেন। মতুয়া এবং উদ্বাস্তুদের জন্য এটা বড় প্রাপ্তি।’’
দীপঙ্কর বিশ্বাস নামে আর এক মতুয়া ভক্তের কথায়, ‘‘আমরা পিছিয়ে পড়া সমাজের মানুষ। যাঁরাই আমাদের উন্নয়ন করবেন, তাঁদের স্বাগত।’’