সড়ক যখন মৃত্যুফাঁদ

দিন কয়েক আগে বেপরোয়া গতিতে চলা ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর। বাসুদেব ঘোষ নামে ওই বৃদ্ধ ছাড়াও জখম হন বেশ কয়েকজন। 

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

হাবড়া শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫১
Share:

যানজট। —নিজস্ব চিত্র।

দিন কয়েক আগে বেপরোয়া গতিতে চলা ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর। বাসুদেব ঘোষ নামে ওই বৃদ্ধ ছাড়াও জখম হন বেশ কয়েকজন।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রাকটির গতি এতই জোরে ছিল যে, প্রথমে দু’টি ভ্যানে ধাক্কা মারে। এরপরে সাইকেলে ধাক্কা মেরে একটি টিনের চালের দোকানে গিয়ে ঢোকে। তখন ওই দোকানে দু’টি শিশু লজেন্স কিনতে এসেছিল। কোনও রকমে তাদের বাঁচানো হয়েছে।

হাবড়া-মগড়া সড়কে (গৌড়বঙ্গ রোড) এমন দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু বা জখম হওয়ার ঘটনা ওই সড়কে রোজই ঘটছে। কখনও ট্রাক-বাসের ধাক্কায় স্কুল পড়ুয়া মারা যাচ্ছে, কখনও অটো উল্টে বা ছোটগাড়ির ধাক্কায় পথচারী মারা যাচ্ছেন। সম্প্রতি গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়ে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয় একাদশ শ্রেণির ছাত্রীর। কিন্তু এত দুর্ঘটনার পরেও হুঁশ ফেরে না চালকদের।

Advertisement

শুধু হাবড়া-মগড়া সড়কই নয়, পথ দুর্ঘটনা বেড়েছে হাবড়া-বসিরহাট সড়ক ও যশোর রোডেও। হাবড়াতে মূলত ওই তিনটি সড়কেই পথ দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছেন। রাজ্য ট্র্যাফিক পুলিশ সমীক্ষা করে জানতে পেরেছে, রাজ্যের যে চল্লিশটি থানায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে, তার মধ্যে হাবড়া রয়েছে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সড়কগুলো কার্যত মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। পথে যাতায়াত করার সময় তাঁরা আতঙ্কে থাকেন। এক একটি পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। বেপরোয়া যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের দাবি তোলা হয়। পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদের পদক্ষেপ করার প্রতিশ্রুতি দেয়। কিছু পদক্ষেপ করাও হয়। কিন্তু তারপরেও ফের দুর্ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি হাবড়াতে অটো দুর্ঘটনা বেড়ে গিয়েছে। অটোতে অতিরিক্ত যাত্রী তোলেন চালক। চালকের দু’পাশেও যাত্রী বসানো হয়। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে চালকেরা বেপরোয়া গতিতে অটো চালান। ফলে সামনে কিছু চলে এলে চালকেরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।

কেন বাড়ছে পথ দুর্ঘটনা?

পুলিশ ও বাসিন্দারা মনে করেন, হাবড়া শহরে যশোর রোডের যানজটে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকেন যানচালকেরা। যানজট থেকে বেরিয়ে ফাঁকা রাস্তায় গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন চালকেরা। ফলে নিয়ন্ত্রণ থাকে না। যানজটের অন্যতম কারণ, শহরের রাস্তায় অসংখ্য অটো ও টোটোর চলাচল। হাবড়ার সড়কগুলো সংস্কার করে ঝাঁ চকচকে করা হয়েছে। এতে চালকেরা আরও জোরে গাড়ি চালাতে পারছেন। সড়কের পাশে ইমারতি মালপত্র ফেল রাখার ফলেও দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সড়কে দুর্ঘটনা কমাতে গার্ডরেল স্পিড ব্রেকার বসানো হয়েছে। দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকাগুলোতে যান নিয়ন্ত্রণ করতে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছে। পথচারীদের সচেতন করতে নিয়মিত প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement