রিমা সাধুখাঁ। —ফাইল চিত্র।
ছুরির আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যু হল এক মহিলার। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যমগ্রামের চণ্ডীগড় এলাকায়। তদন্তে নেমে পুলিশের ধারণা, পারিবারিক বিবাদকে কেন্দ্র করে কোনও হিংসাত্মক ঘটনার জেরেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। মৃতার নাম রিমা সাধুখাঁ (৫০)। ছুরির আঘাতে আহত হয়েছেন তাঁর স্বামী ললিত সাধুখাঁও। সঙ্কটজনক অবস্থায় তিনি বারাসত হাসপাতালে ভর্তি। ললিত সুস্থ হওয়ার পরে তাঁকে ওই ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ।
এই ঘটনাকে ঘিরে শুক্রবার সকালে চাঞ্চল্য ছড়ায় মধ্যমগ্রাম পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের চণ্ডীগড় এলাকায়। প্রতিবেশীরা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই ললিত ও রিমার মধ্যে বিশেষ বনিবনা ছিল না। বাড়িতে অশান্তি লেগেই থাকত। বৃহস্পতিবার রাতে যা চরমে ওঠে। তাঁদের থামাতে প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে হাজিরও হন। কিন্তু ভিতর থেকে আর্তনাদের শব্দ পাওয়া গেলেও কেউ দরজা খোলেননি বলেই স্থানীয়েরা জানান। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনার সময়ে বাড়িতে আর কেউ ছিলেন না। বিবদমান দম্পতির ছেলে ও বৌমা বাড়ির বাইরে ছিলেন। বাড়ির কেউ দরজা না খোলায় তাঁদের ছেলেকে খবর দেন প্রতিবেশীরা। ছেলে-বৌমা এসে ঘরে ঢুকে দেখেন, ললিত ও রিমা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন। তাঁদের বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রিমার মৃত্যু হয়। সঙ্কটজনক অবস্থা ললিতের। তাঁকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক ভাবে তাঁদের সন্দেহ, ললিতই স্ত্রীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেছেন। কিন্তু তিনি কী ভাবে জখম হলেন, সেটাই ললিত সুস্থ হলে জানার চেষ্টা করা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, ললিতের বিরুদ্ধে রিমাকে খুনের অভিযোগ করেছেন তাঁদের ছেলে। যার ভিত্তিতে পুলিশ একটি খুনের মামলা রুজু করেছে। তদন্তকারীরা জানান, ললিত কী করে জখম হলেন, সেটাই আশ্চর্যের। তবে, ললিত ছুরি চালানোতেই যে রিমার মৃত্যু হয়েছে, সে ব্যাপারে পুলিশ মোটামুটি নিশ্চিত। তাদের অনুমান, ছুরিতে বিদ্ধ হওয়ার পরে রিমাও প্রত্যাঘাতের চেষ্টা করেছিলেন। তাতেই ললিত জখম হন। আবার স্ত্রীকে ছুরিতে রক্তাক্ত হতে দেখে ভয়ে ললিত আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ।
এক তদন্তকারী আধিকারিক জানান, মাঝে কিছু দিন ললিতের সঙ্গে রিমার কোনও যোগাযোগ ছিল না। পরে আবার ললিত ফিরে আসেন। দু’জনের অশান্তি যে এমন চরম আকার নিতে পারে, তা ভেবেই বিস্মিত প্রতিবেশীরা।