Death

চড়া রোদে মোবাইলে ‘রিল’ বানাতে গিয়ে কিশোরীর মৃত্যু

এ বার তাপপ্রবাহ চলাকালীন দুপুরের প্রবল রোদে রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়ে মোবাইলে রিল বানাতে গিয়ে মৃত্যু হল বছর পনেরোর এক কিশোরীর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সোনারপুর শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৩৯
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

রেললাইনে, নদীতে নিজস্বী তোলায় বুঁদ হয়ে মৃত্যুর ঘটনা শোনা যায় প্রায়ই। এ বার তাপপ্রবাহ চলাকালীন দুপুরের প্রবল রোদে রেললাইনের ধারে দাঁড়িয়ে মোবাইলে রিল বানাতে গিয়ে মৃত্যু হল বছর পনেরোর এক কিশোরীর। বৃহস্পতিবার শহরের তাপমাত্রা যখন ৪১-৪২ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে, তখনই এই ঘটনাটি ঘটে সোনারপুরের চণ্ডীতলা এলাকায়। তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, সে বিষয়ে চিকিৎসকেরা বার বার সতর্ক করছেন। ফলে, এমন অঘটন প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে জনসচেতনতা নিয়েই।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইলে রিল বানাতে ভালবাসত কিশোরী। পড়াশোনার পাশাপাশি এটা ছিল তার নেশা। দুপুরের চড়া রোদে এ দিন বন্ধুদের সঙ্গে রিল বানাচ্ছিল সে। তখনই অসুস্থ হয়ে পড়ে। হাসপাতালে নিয়ে গেল মৃত্যু হয় তার। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম আলপনা গোমস। স্থানীয় রাধাগোবিন্দপল্লিতে মায়ের সঙ্গে ভাড়া থাকত সে। জানা গিয়েছে, এ দিন কিশোরীর মা বাড়ি ছিলেন না। দুপুরে বাড়ির কাছেই চণ্ডীতলা এলাকায় রেললাইনের ধারে গিয়ে কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে মোবাইলে রিল বানাচ্ছিল আলপনা। আচমকা অসুস্থ বোধ করলে বন্ধুরা ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই কিশোরীর মৃত্যু হয়।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল আলপনা। অক্সিজেন দেওয়া হলেও শেষরক্ষা হয়নি। সোনারপুর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক অনুপকুমার মিশ্র বলেন, “খুবই খারাপ অবস্থায় মেয়েটিকে আনা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও পারেননি। মেয়েটির শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর আসল কারণ বোঝা যাবে।”

Advertisement

কিশোরীর যে শ্বাসকষ্ট ছিল, সে কথা জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যেরাও। এক আত্মীয়া রেখা গোমসের কথায়, “ওর বাবা বাইরে থাকেন। মায়ের সঙ্গে ভাড়া থাকত। মা কলকাতায় কাজ করেন। শ্বাসকষ্ট ছিল মেয়েটার। কিন্তু কী ভাবে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, জানি না।” স্থানীয় বাসিন্দা সুখেন্দু জোতদার বলেন, “দুপুরে কয়েক জন মিলে মোবাইলে রিল বানাচ্ছিল। তখনই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সম্ভবত গরমেই অসুস্থ হয়।”

জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, “প্রায় প্রতিদিনই গরমে অসুস্থতার খবর আসছে। প্রয়োজন ছাড়া এই গরমে কোনও ভাবেই বেরোনো চলবে না। বেরোলে ছাতা-টুপি নিতে হবে, ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে। পর্যাপ্ত জল খেতে হবে। বাচ্চা ও বয়স্কদের বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে হবে।” অন্য শারীরিক সমস্যা থাকলে প্রবল গরমে আরও বেশি খারাপ প্রভাব পড়তে পারে বলে জানান তিনি। কিশোরীর শ্বাসকষ্ট থাকায় দ্রুত এমন অঘটন ঘটল বলেও অনুমান তাঁর।

মনোরোগ চিকিৎসক সুজিত সরখেল বলছেন, “নিজেকে অন্যের কাছে প্রকাশ করার ঝোঁক থেকেই রিলের বাড়বাড়ন্ত। কমবয়সিদের মধ্যে নানা ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা এমনিতেই বেশি, এখন তা বাড়ছে। এ সব নিয়ে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement