West Bengal Panchayat Election 2023

‘ওই বোমা কেন আমার গায়ে লাগল না’

বুধবার সকাল থেকে ইমরানের বাড়ির উঠোনে শোকস্তব্ধ আত্মীয়, প্রতিবেশীদের ভিড়। ময়না তদন্তের পরে দেহ ফিরতেই কান্নার রোল উঠল। সকলের চোখে জল।

Advertisement

ঋষি চক্রবর্তী

দেগঙ্গা: শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ০৬:৫০
Share:

এই বাড়ির ছাদ থেকেই বোমা ছোড়া হয়েছিল।

কলেজে পড়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল ইমরান হোসেনের।

Advertisement

মঙ্গলবার রাতে তৃণমূলের মিছিল থেকে ফেরার পথে বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে তার। সোহাই শ্বেতপুর পঞ্চায়েতের গাঙহাটি গ্রামের বাসিন্দা ইমদাদুল হকের বড় ছেলে হাসানুজ্জামানের পড়াশোনার পাট চুকেছিল মাধ্যমিকের আগেই। ছোট ছেলে ইমরান মাধ্যমিক পাশ করার পরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল এ বছরই। ইমরানের স্বপ্ন ছিল কলেজে পড়ার। চাকরি করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চাইত।

হাসানুজ্জামান বুধবার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "ভাইয়ের খুব ইচ্ছে ছিল, কলেজে পড়বে। কিন্তু সব শেষ করে দিল ওরা। আমার থেকে অনেক ছোট। খুব ভালবাসতাম, আমার শক্তি ছিল ভাই।"

Advertisement

বুধবার সকাল থেকে ইমরানের বাড়ির উঠোনে শোকস্তব্ধ আত্মীয়, প্রতিবেশীদের ভিড়। ময়না তদন্তের পরে দেহ ফিরতেই কান্নার রোল উঠল। সকলের চোখে জল। প্রতিবেশী ফারুক আহমেদ বলেন, "শান্ত স্বভাবের ছেলে ছিল। গরিব ঘরের ছেলে হলেও কখনও অন্যায় আবদার করতে দেখিনি। খুব মিশুকে ছিল ছেলেটা।"

ঘরে ঢুকে দেখা গেল, চৌকির পাশে থরে থরে সাজানো বই-খাতা। আর কখনও তার পাতা উল্টাবে না কেউ। সকালেও বই-খাতা গুছিয়ে রেখেছিল ছেলে, জানালেন পরিারের লোকজন।বাবা ইমদাদুল হক কোনও রকমে বললেন, "আর কেউ বলবে না, বই-খাতা কিনব, টাকা দাও।ইদে আর ওকে নতুন পাঞ্জাবি কিনে দিতে পারব না। ওই বোমা আমার গায়ে লাগল না কেন!’’

দেগঙ্গার তৃণমূল নেতা মফিদুল হক সাহাজি বলেন, "একটা ছোট্ট ছেলেকে হামলায় মরতে হল। ওর মায়ের কোল পূরণ করবে কে!" দেগঙ্গার সিপিএম নেতা ইমতিয়াজ হোসেন বলেন, "ইমরানের প্রাণ গেল তৃণমূলের কোন্দলে। আমরা প্রথম থেকেই বলছি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের কথা। রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে এই সব মৃত্যুর দায় নিতে হবে।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement