প্রচেষ্টা: চাষের কাজে হাত লাগিয়েছেন শিক্ষক-পড়ুয়া। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলে মিড ডে মিলে পড়ুয়াদের পাতে পুষ্টিকর খাবার তুলে দিতে পদক্ষেপ করেছে গাইঘাটার শশাডাঙা এফপি স্কুল। স্কুল চত্বরেই আনাজ চাষের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ জন্য অনলাইনে রাজস্থান থেকে আনা হয়েছে, ব্রাশ কাটার ও মিনি টিলার মেশিন। পেট্রল-চালিত এই যন্ত্রের দাম ১৭,০০০ টাকা। এই যন্ত্র দিয়ে খেত প্রস্তুত করা, পরিচর্যা-সহ পাঁচটি চাষের কাজ করা সম্ভব।
শশাডাঙা এফপি স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২২২ জন। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মিড ডে মিলের রান্না ১০০ শতাংশ পড়ুয়া খায়। প্রধান শিক্ষক বাবুলাল সরকার বলেন, “স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকা ৯ জন। প্রত্যেকে চাষের যন্ত্রটি কেনার জন্য অর্থ সাহায্য করেছেন।” মাঝে মধ্যে শিক্ষকেরা চাঁদা তুলে পড়ুয়াদের মুরগির মাংসও খাওয়ান মিড ডে মিলে। স্কুল সূত্রে জানা গেল, কয়েক বছর আগে থেকেই স্কুলে আনাজ চাষ করা হয়। আগে তা করা হত অর্ধেক কাটা জমিতে, ছোট আকারে। বেগুন, লঙ্কা চাষ হত। এখন প্রায় আড়াই কাঠা জমিতে আনাজ চাষের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
নতুন যন্ত্র দিয়ে প্রধান শিক্ষক নিজেই খেত প্রস্তুত করেছেন। চাষের কাজে তাঁকে সাহায্য করছেন, প্রদীপ মণ্ডল, গৌতম রায়, দীপঙ্কর মণ্ডল নামে তিন শিক্ষক। খেতে লাগানো হয়েছে গাজর, বিন, মটরশুটি, লালশাক, পালংশাক, লাউ-সহ নানা আনাজ। শিক্ষকদের আশা, দেড়-দু’মাসের মধ্যে আনাজের ফলন শুরু হবে। পড়ুয়াদের প্রয়োজন মিটিয়ে কিছু আনাজ বিক্রিও করা যাবে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।
স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, আনাজ চাষে কোনও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না। গোবর সার ও স্কুলে বাড়তি পচনশীল জিনিসের তৈরি সার দেওয়া হয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালেন, চাষের জন্য যে যন্ত্রটি কেনা হয়েছে, তা এলাকায় নতুন। চাষিদের কাছেও তা নেই। ফলে সেগুলি দিয়ে কী ভাবে চাষ করা হচ্ছে, তা দেখতে স্থানীয় চাষিরাও স্কুলে আসছেন। পড়ুয়াদের চাষের কাজ দেখাচ্ছেন শিক্ষকেরা। তাদের দিয়ে ঘাস, আগাছা তোলার কাজ করানো হচ্ছে। তাতে পড়ুয়ারাও উৎসাহিত হচ্ছে। মিড ডে মিলে সাশ্রয় হবে এ ভাবে, আশা শিক্ষকদের। স্কুলের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ে দুঃস্থ পরিবারের। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার পায় না অনেকে। এই অবস্থায় মিড ডে মিলে পুষ্টিকর খাবার দিতে চাইছেন শিক্ষকেরা। স্কুলের বাগানে আনাজ ফলিয়ে সেই কাজ হবে বলেই তাঁদের মত।