শোকগ্রস্ত: ভাঙড়ের জিরেনগাছা হাসপাতালে মৃত শিশুকে নিয়ে মনিরুল ও তাঁর পরিবার। ছবি: সামসুল হুদা
জমি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের জেরে মারামারি বেধেছিল। গর্ভবতী এক মহিলার পেটে লাথি লাগে। ঘটনাস্থলেই প্রসব হয়ে যায়। শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে জানিয়ে দেন।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙড়ের কাশীপুর থানার চালতাবেড়িয়া গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মনিরুল মল্লিকের অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর ভাই আলাউদ্দিন মল্লিক, আজহারউদ্দিন মল্লিক, রশিদা বিবিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার বাসিন্দা মনিরুলের সঙ্গে ভাই আলাউদ্দিন মল্লিকের জমি নিয়ে বিবাদ রয়েছে। অভিযোগ, বিতর্কিত জমিতে মনিরুল বাড়ি করে বসবাস করছেন। এই নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে প্রায়ই গন্ডগোল হয়।
এদিন মনিরুল বাড়িতে না থাকার সুযোগে আলাউদ্দিন, তাঁর স্ত্রী রশিদা ও ছেলে আজহারউদ্দিন মল্লিক-সহ কয়েকজন গালিগালাজ করে। মনিরুলের বাড়ি লক্ষ্যকরে ইট-পাটকেল ছোড়ে বলে অভিযোগ। বাড়ির অ্যাসবেস্টসের চাল ভেঙে যায়।
মনিরুলের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা মেয়ে সুমা খাতুন ঘটনার প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, কাকা, কাকিমা ও খুড়তুতো ভাই তাঁকে মারধর করে। পেটে লাথি মারে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সুমা। মাথা ফেটে যায়। প্রসব হয়ে যায়। মা-শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মনিরুলের পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে আসার পরে দীর্ঘক্ষণ শিশুকে চিকিৎসা না করে বাইরে রাখা হয়েছিল। মনিরুল বলেন, ‘‘জমি নিয়ে বিবাদের কারণে এই ভাবে আমার অন্তঃসত্ত্বা মেয়ের পেটে লাথি মেরে বাচ্চাকে মেরে ফেলবে, ভাবতে পারিনি। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু হলেও হয় তো বাচ্চাটা বেঁচে যেত।’’
এ বিষয়ে জিরেনগাছা ব্লক হাসপাতালের বিএমওএইচ হিরণ্ময় বসু বলেন, ‘‘চিকিৎসায় গাফিলতির কোনও অভিযোগ পাইনি। মৃত অবস্থায় ওই শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। শিশুর মায়ের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক ছিল। সে কারণে মায়ের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।’’
তদন্তে নেমে পুলিশ রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।