দুর্ঘটনাস্থল, মোস্তফা মণ্ডল (ইনসেটে)। —ফাইল চিত্র।
জলের পাইপ বসানোর জন্য খুঁড়ে রাখা গর্তে পড়ে মৃত্যু হল এক যুবকের। মৃতের নাম মোস্তফা মণ্ডল (২৫)। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দেগঙ্গা থানার চৌরাশি পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মাটিকুমড়া গ্রামের মাঝেরপাড়ায়, বেড়াচাঁপা-হাবরা রোডে। সোমবার দেহ ময়না তদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। পরিবারের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে এ দিন সকালে বেড়াচাঁপা-হাবড়া রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘণ্টাখানেক ধরে চলে বিক্ষোভ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের জলজীবন মিশন প্রকল্পে দেগঙ্গা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে রাস্তার ধারে জলের পাইপ বসানোর কাজ চলছে। মাটিকুমড়া গ্রামেও সেই কাজ চলছে। রাস্তার ধার বরাবর ৮ ফুট গভীর করে পাইপ বসাচ্ছেন ঠিকাদার সংস্থার লোকজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাত ৯টা নাগাদ সুন্দিপুকুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন দক্ষিণ মাটিকুমড়ার বাসিন্দা, পেশায় দর্জি মোস্তফা। সঙ্গে হাবিল নামে এক বন্ধু ছিলেন। মাঝেরপাড়া এলাকায় আসতেই আচমকা রাস্তায় ধস নামে। গর্তে পড়ে যান মোস্তফা। চারদিক থেকে আরও মাটি ধসে পড়ে। চাপা পড়ে যান যুবক।
হাবিলের চিৎকারে ছুটে আসেন গ্রামবাসীরা। মাটি সরিয়ে উদ্ধার করা হয় মোস্তফাকে। বিশ্বনাথপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
বিক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। সকালে ক্ষতিপূরণের দাবিতে পথ অবরোধ হয়। মৃতের স্ত্রী সাবিনা খাতুন বলেন, ‘‘দু’বছরের মেয়ে আর তিন মাসের ছেলেকে নিয়ে আমি এখন কী করে বাঁচব! সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।’’
স্থানীয় প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য আশরফ আলি বলেন, "দিন পনেরো আগেও এখানে ধস নেমে এক শ্রমিক আহত হয়েছিলেন। সে সময়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।" এ দিন সকালে দেখা যায়, দুর্ঘটনার পরে খোঁড়া গর্তের পাশে গার্ড রেল বসানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা লাল্টু আহমেদ, হাবিব আলিরা বলেন, ‘‘ঠিকাদার সংস্থা সতর্ক হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।"