সাফল্য: পদক হাতে প্রিয়াংশু। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
চার বছর বয়সে ক্যারাটেয় হাতেখড়ি হয়েছিল ক্যানিংয়ের প্রিয়াংশু দাসের। বারো বছরের মধ্যে ক্যারাটেয় বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছে সে। ফল ব্যবসায়ী দীপঙ্কর দাস ও মা বনশ্রী দাস অভাবের সংসারেও চান, ছেলে যেন খেলাধুলা চালিয়ে যেতে পারে।
দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার তাঁদের। প্রিয়াংশু মাঝে মাঝেই ডাক পায় জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিযোগিতায় যোগদানের। ছেলেকে পাঠাতে হিমশিম খেতে হয় দাস পরিবারকে। অনেক ক্ষেত্রেই লোকজনের কাছ থেকে ধারদেনা করতে হয়।
ক্যানিং ডেভিড সেশুন হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র প্রিয়াংশু ২০১৬ সালে প্রথম জাতীয় স্তরের ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। সেখানে চারটি বিভাগে প্রতিটিতেই প্রথম স্থান পায়। পরে কান্নুর, মুম্বই, লখনউ, পঞ্জাব, দিল্লি, হরিয়ানা, বেঙ্গালুরু, পুণে-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য পেয়েছে সে। সম্প্রতি কোয়েম্বতুরে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়ে চারটি বিভাগে স্বর্ণপদক পেয়েছে প্রিয়াংশু। এখনও পর্যন্ত তিনটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে যোগ দিয়েছে সে। জাতীয় স্তরে একশোর বেশি প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে তার। ফেব্রুয়ারিতে ফের বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল। মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য যাচ্ছে না।
প্রিয়াংশু বলে, “আমার লক্ষ্য, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে নিজের এই শিক্ষা দেশের কাজে ব্যবহার করব।”
ক্যানিংয়ের অমর সঙ্ঘ ক্লাবের ক্যারাটে কোচ সেবাশিস দাসের কাছে ক্যারাটেতে হাতেখড়ি হয়েছিল প্রিয়াংশুর। পরে শ্যামবাজারে পরেশকুমার মিশ্রের কাছে তালিম নেয়। ছাত্রকে পরে কেরলেও পাঠান পরেশ।
দীপঙ্কর বলেন, “আমি ফুটপাতে ফলের ব্যবসা করি। সামান্য যা রোজগার হয়, তা দিয়ে কোনওমতে সংসার চলে। এ সবের মধ্যে দিয়েই ছেলের খেলাধূলার খরচ জোগাড় করতে হয়। ধার করে হলেও ওকে খেলতে পাঠাই।” বনশ্রীর কথায়, “প্রয়োজনে বাড়ি-ঘর বিক্রি করেও ছেলেকে এগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।”