Diabetes

সাইকেলে সুন্দরবনে ডায়াবিটিসের ওষুধ বিলি

ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত সৌমিত্র। পড়াশোনা শেষে গোসাবার একটি স্কুলে আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন।

Advertisement

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:২৬
Share:

পাশে আছি: ওষুধ দিচ্ছেন সৌমিত্র। নিজস্ব চিত্র

সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত মানুষের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছেন গোসাবার বালি দ্বীপের ৫ নম্বর গ্রামের বাসিন্দা সৌমিত্র মণ্ডল। প্রতিদিন নিয়ম করে বিভিন্ন দ্বীপে দ্বীপে ঘুরে ডায়াবিটিস আক্রান্তদের রক্তে সুগারের পরিমাপ করেন তিনি। প্রয়োজনে বিনামূল্যে ওষুধ দেন। তিনি নিজেও ভুগছেন ডায়াবিটিসে। তেমন বুঝলে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন বছর আঠাশের ওই যুবক।

Advertisement

ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত সৌমিত্র। পড়াশোনা শেষে গোসাবার একটি স্কুলে আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু বছর দুই আগে সেই কাজ চলে যায়। এরই মধ্যে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হন তিনি। কিন্তু ভেঙে না পড়ে মানুষের জন্য কাজ চালিয়ে যাবেন বলে ঠিক করেন।

সমাজসেবামূলক কাজ করতে গিয়ে বহু মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে তাঁর। তাঁদের সাহায্যেই বর্তমানে সাতজেলিয়া, মোল্লাখালি, কুমিরমারি, আমলামেথি সহ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্তে এই রোগে আক্রান্তদের হাতে বিনামূল্যে ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন সৌমিত্র। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিজে এই অসুখে ভুগছি বছরখানেক ধরে। এই অসুখকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত চিকিৎসা ও ওষুধের প্রয়োজন। কিন্তু সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজন তা করে উঠতে পারেন না। তাই আমি নিজের উদ্যোগে ওষুধ পৌঁছে দিই।” সৌমিত্র জানান, পরিচিত লোকজন ওষুধ, টাকা পাঠিয়ে এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেন। প্রশাসনের লোকজনের সাহায্যও তিনি পান। নিজের খরচেও অনেক সময় ওষুধ কেনেন।

Advertisement

মূলত লকডাউনের সময়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় রোগে আক্রান্তরা অনেকেই হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি। সমস্যার বিষয়টি সামনে আসতেই এই সমস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন সৌমিত্র। ২৪ জুন নিজের জন্মদিনে এই সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা নিয়ে নিজের সাইকেলকে সঙ্গী করে গোসাবা ব্লকের বিভিন্ন দ্বীপে ঘুরতে শুরু করেন তিনি।

তাঁর কর্মকাণ্ডের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে গিয়ে পরিচয় ঘটে ডায়াবিটিস নিয়ে কাজ করা একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে। সৌমিত্রের উদ্যোগে খুশি দ্বীপাঞ্চলের মানুষজন। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “সৌমিত্র যা করছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ওঁর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে ওঁর উদ্যোগে পাশে আছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement