উৎসাহ: ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের আবেদনপত্র সংগ্রহের ভিড়। দত্তপুকুর নিবাদুই স্কুলে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
রাজ্যের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির শিবিরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি যোগ দেবে বলে আগেই জানানো হয়েছিল। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ওই কর্মসূচির প্রথম দিনের শেষে চওড়া হাসি দেখা গিয়েছে ব্যাঙ্কগুলির প্রতিনিধিদের মুখে। ব্যাঙ্ক ক্ষেত্র ও প্রশাসন সূত্রে খবর, সোমবার দুয়ারে সরকারের শিবিরে ছ’হাজারের বেশি উপভোক্তা সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন জমা দিয়েছেন বিভিন্ন শিবিরে। তাঁদের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ওই দিনই খোলা হয়ে গিয়েছে। বাকিদের আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির কাছে পৌঁছে গিয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদনকারীদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা।
জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার রজত বালার দাবি, বঙ্গীয় বিকাশ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা ব্লক স্তরে বেশি হওয়ায় ওই ব্যাঙ্কেই অ্যাকাউন্ট খোলার দরখাস্ত বেশি জমা পড়েছে। তিনি বলেন, ‘‘১৫০টির বেশি শিবিরে হাজির ছিলেন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা। মোট ৬,১৫২টি সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার দরখাস্ত সোমবার জমা পড়েছে। তার মধ্যে ৪২২৫টি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে গিয়েছে ওই দিনই। ১,৯২৭টি আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলিতে গিয়েছে।’’
রাজ্যের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ কর্মসূচির সুফল ঘরে তুলতে প্রতিটি জেলার সব শিবিরে মহিলাদের ঢল নেমেছে। ব্যতিক্রম নয় দক্ষিণ ২৪ পরগনাও। রজতবাবু বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা পেতে কত মহিলা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে শিবিরে মহিলাদের ঢল নামা দেখে আমাদের ধারণা, ওই প্রকল্প ঘোষণা হওয়ার কারণেই সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার উৎসাহ বেড়েছে মহিলাদের মধ্যে।’’
মঙ্গলবার দুপুরেও ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরগুলিতে মহিলাদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি নজরে এসেছে। এ দিনও বহু মহিলা সেভিংস অ্যাকাউন্ট খুলতে লাইন দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। রজতবাবুর কথায়, ‘‘প্রথম দিনই এত মানুষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন করবেন, তা আশা করিনি। সব থেকে বেশি অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন পড়েছে বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কে। ওই ব্যাঙ্কের শাখা গ্রামাঞ্চলে সব থেকে বেশি।’’
প্রসঙ্গত, চলতি অর্থবর্ষে জেলায় ২২,০০০ স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরির পকিকল্পনা করেছে প্রশাসন। সেই প্রক্রিয়া চলছে। গোষ্ঠীর সদস্যদের সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষগুলি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বহু সদস্যও সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলার আবেদন জমা দিতে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে আসছেন বলে দাবি প্রশাসনের।
এই প্রথম ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে ব্যাঙ্কগুলি। কোন জায়গায়, কোন শিবিরে, কোন ব্যাঙ্কের কতজন প্রতিনিধি থাকবেন তা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে স্থির করেছে ব্যাঙ্কগুলির কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ (এসওপি) তৈরি করে সেগুলি প্রতিটি জেলায় পাঠিয়ে দেয় ‘লিড’ ব্যাঙ্ক (ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে রাজ্য সরকারের সমন্বয় রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত)। ‘লিড’ ব্যাঙ্কের তরফে জানানো হয়েছে, ব্যক্তিগত এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের সেভিংস অ্যাকাউন্ট খোলা ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন পেনশন প্রকল্প সম্পর্কে গ্রহীতাদের বক্তব্য থাকলে তা-ও তাঁরা লিখিত আকারে জমা দিচ্ছেন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিদের কাছে।