ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে মারা যায় অনীশা সরকার (১৩)।
ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল এক মেধাবী ছাত্রীর। বৃহস্পতিবার ভোরে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে মারা যায় অনীশা সরকার (১৩)। বাড়ি গাইঘাটা থানার ডুমা পঞ্চায়েতের মনমোহনপুর এলাকায়। তার মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে।
কিশোরীর মৃত্যুতে গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, এলাকায় জ্বর-ডেঙ্গি ছড়ালেও পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের তরফে ডেঙ্গি প্রতিরোধে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। স্থানীয় কয়েকজন মহিলা জানান, অনীশার মৃত্যুর পর আজই পঞ্চায়েত থেকে ঝোপ-জঙ্গল পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে একদিন মাত্র মশা মারার তেল ছড়ানো হয়েছিল।
স্থানীয় টিএসডি মনমোহনপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির পড়ুয়া ছিল অনীশা। বরাবরই সে স্কুলে পরীক্ষায় প্রথম হত। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার থেকে জ্বর আসে তার। প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসককে দেখানো হয়। মঙ্গলবার তাঁরই পরামর্শ অনুযায়ী একটি বেসরকারি প্যাথোলজি সেন্টারে রক্ত পরীক্ষা করানো হয়। বুধবার সকালে সেই রক্তের রিপোর্ট হাতে পান পরিবারের লোকজন। তারপরেই অনীশাকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যায় মেয়েটি। বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার সপ্তর্ষি চৌধুরী বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনীশার শারীরিক অবস্থা ভাল ছিল। রাতে পরিস্থিতি খারাপ হয়। ওকে রক্ত দিতে হয়। সব রকম চিকিৎসার ব্যবস্থাই করা হয়। তা সত্ত্বেও বাঁচানো গেল না।’’
কিশোরীর বাবা অলোক বলেন, ‘‘সোমবার মেয়েকে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। বহির্বিভাগে দেখানো হয়। আমরা ভর্তি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন ওর জ্বর না থাকায় চিকিৎসক ভর্তি নেননি। তখন ভর্তি করা গেলে হয় তো এ ভাবে ওকে হারাতে হত না।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, এমন কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। পেলে নিশ্চয়ই তদন্ত করে দেখা হবে। এ দিন অনীশার স্কুলে ক্লাস হয়নি। সহপাঠীরাও অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ে। কয়েকজন বলে, ‘‘আমরা আতঙ্কে রয়েছি। এ ভাবে বন্ধুকে হারাতে হবে ভাবতেই পারিনি।’’