—প্রতীকী চিত্র।
সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। মৃতের নাম হরিপদ দাস (৪৮)। রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের পিরখালির গাজিখালি জঙ্গলে।
হরিপদের দুই সঙ্গী বাঘের সঙ্গে লড়াই করে তাঁকে উদ্ধার করে আনলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সোমবার ভোরে ঝড়খালি কোস্টাল থানার পুলিশ দেহ ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে বন দফতর।
সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডেপুটি ফিল্ড ডিরেক্টর জোন্স জাস্টিন বলেন, “ঘটনার কথা শুনেছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে ওঁদের বৈধ অনুমতি ছিল না মাছ-কাঁকড়া ধরার।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত শুক্রবার দুই সঙ্গী চন্দন মাহাতো এবং লাল্টু দাসকে সঙ্গে নিয়ে ঝড়খালির ত্রিদিবনগর ডি ব্লক থেকে সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন হরিপদ। মাঘীপূর্ণিমার কোটালে বেশ ভালই কাঁকড়া মিলছিল বলে জানিয়েছেন চন্দন ও লাল্টু। তাঁরা জানান, রবিবার বিকেলে নদীর চরে কাঁকড়া ধরছিলেন তাঁরা হঠাৎ একটি বাঘ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে থাবা বসায় হরিপদের বাঁ গালে। কাদায় ছিটকে পড়েন তিনি। চন্দন-লাল্টুরা জানান, কাঁকড়া ধরার লোহার শিক নিয়ে বাঘের সঙ্গে লড়াই শুরু তরেন তাঁরা। এক সময়ে হরিপদকে ছেড়ে জঙ্গলের মধ্যে পালিয়ে যায় বাঘ।
রক্তাক্ত সঙ্গীকে উদ্ধার করে গ্রামের দিকে রওনা দেন চন্দন-লাল্টু। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঝড়খালিতে এসে পৌঁছন। বাসন্তীর সোনাখালিতে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে।
স্বামীর অকালমৃত্যুতে দিশাহারা স্ত্রী বিশাখা। তিনি বলেন, “আমার বিয়ের আগে থেকেই জঙ্গলে যান উনি। কোনও দিন বিপদে পড়তে হয়নি। সংসার চালাতে এই কাজ করতেন। এমন সর্বনাশ হবে ভাবতেও পারিনি। পরিবারে স্বামীই ছিলেন রোজগেরে মানুষ। এ বার সংসার কী ভাবে চলবে জানি না।”