হস্টেল থেকে পালাল কিশোর, ফেরাল পুলিশ

হোস্টেল থেকে পালিয়েছিল ছেলে। অবশেষে তাকে উদ্ধার করে শনিবার বাবার হাতে তুলে দিল ক্যানিং থানার পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলতলির চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই ছেলেটি পড়ে ঢোলার একটি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে। হস্টেলে থাকত সে। অভিযোগ, গত ৬ মে তাকে বকাবকি করেন হোস্টেলের এক আধিকারিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ক্যানিং শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৫ ০১:০১
Share:

হোস্টেল থেকে পালিয়েছিল ছেলে। অবশেষে তাকে উদ্ধার করে শনিবার বাবার হাতে তুলে দিল ক্যানিং থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কুলতলির চাঁদপুর গ্রামের বাসিন্দা ওই ছেলেটি পড়ে ঢোলার একটি হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণিতে। হস্টেলে থাকত সে। অভিযোগ, গত ৬ মে তাকে বকাবকি করেন হোস্টেলের এক আধিকারিক। সে ভয়ে পালায় সেখান থেকে। ইচ্ছে ছিল বাড়ি যাবে। ট্রেনে উঠে পড়ে ঘুমিয়ে পড়ে ছেলেটি। জয়নগর স্টেশনে নামার বদলে শিয়ালদহে গিয়ে ঘুম ভাঙে তার। সেখানে কিছু চিনতে না পেরে কান্নাকাটি শুরু করে।

সে সময়ে কলকাতায় কাজ সেরে ক্যানিংয়ের বাড়িতে ফিরবেন বলে ট্রেন ধরতে এসেছিলেন মোরসেলিম গাজি। তিনি ছেলেটিকে কাঁদতে দেখে সঙ্গে করে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন।

Advertisement

অপরিচিত একটি ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তাঁকে দু’দিন ধরে এলাকায় ঘুরতে দেখে আশপাশের লোকজন খবর দেন ক্যানিং থানায়। পুলিশ দু’জনকে থানায় আনে। ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তার বাড়ি কুলতলিতে। শুক্রবার রাতেই তার বাড়িতে খবর দেয় পুলিশ।

এ দিকে, ছেলেকে তত দিনে হন্যে হয়ে খুঁজছেন বাবা। ঢোলা থানায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার বিভিন্ন ট্রেনে ছেলের ছবি দিয়ে ‘সন্ধান চাই’ লেখা পোস্টারও সাঁটিয়েছিলেন। যোগাযোগ করেছিলেন জেলা চাইল্ড লাইনের সঙ্গে। ভবাণীভবনে গোয়েন্দা দফতরের মিসিং পার্সন স্কোয়াডেও অভিযোগ জানানোর তোড়জোড়় শুরু করেছিলেন তিনি। শুক্রবার থানা থেকে ফোন পাওয়ার পরে ধড়ে প্রাণ আসে তাঁর। শনিবারই চলে আসেন ক্যানিং থানায়। সেখানেই ছেলেকে বাবার হাতে তুলে দেন ওসি সতীনাথ চট্টরাজ।

ছেলের বাবার কথায়, ‘‘ওকে খুঁজে না পেয়ে ভেঙে পড়েছিলাম। শেষমেশ পুলিশের সাহায্যে ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। ওঁদের ধন্যবাদ জানানোর ভাষা নেই।’’

কিন্তু মোরসেলিম কেন নিজেই আগে যোগাযোগ করেননি পুলিশের সঙ্গে? তিনি বলেন, ‘‘আমি মুখ্যু-সুখ্যু মানুষ। কলকাতা থেকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলাম। ছেলেটিকে স্টেশনে কাঁদতে দেখে খুব মায়া হয়। তাই ওকে বাড়িতে নিয়ে চলে এসেছিলাম। ভেবেছিলাম, খোঁজ-খবর করে আমিই বাড়িতে পৌঁছে দেবো ওকে।’’

আর কী বলছে ছেলেটি?

তার কথায়, ‘‘হস্টেলের এক স্যার বকাবকি করেছিলেন। ভয়ে পালাচ্ছিলাম। ট্রেনে উঠে ঘুমিয়ে পড়ে এই অবস্থা হল। ওই কাকু আমাকে সঙ্গে করে নিয়ে যান। বাড়িতে যত্ন করে রেখেছিলেন।’’

হস্টেলে আর ফিরতে চায় না ছেলেটি। বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করতে চায়। এ ব্যাপারে কী করা যায়, তা ভেবে দেখছেন বলে জানিয়েছেন তার বাবা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement