Coronavirus

বারাসতে সাত দিনের লকডাউনে সর্বসম্মতি

তবে মধ্যমগ্রাম পুর এলাকায় বহাল থাকছে আগের নিয়মই। রাজ্য জুড়ে সপ্তাহে দু’দিন পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২০ ০৬:৫৮
Share:

অ-সচেতন: মাস্ক ছাড়া পথে বেরোনো এক ব্যক্তিকে লাঠির ভয় দেখাচ্ছেন  এক পুলিশকর্মী। বুধবার, বারাসতে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক 

বার বার বলা সত্ত্বেও নিয়ম মানছিলেন না প্রায় কেউ। সমস্ত নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছিল অবাধ যাতায়াত। তাই বাধ্য হয়ে বারাসত পুর এলাকায় আংশিক কিংবা সময়ভিত্তিক নয়, টানা সাত দিন পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। দু’দিন আগেই স্থানীয় পুর প্রশাসন পূর্ণ লকডাউনের প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়েছিল। বুধবার সর্বদলীয় বৈঠকে তা কার্যকর করার সিদ্ধান্ত হয়। চলতি সপ্তাহের শনিবার থেকে আগামী শুক্রবার সাত দিনের জন্য বারাসত পুর এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন জারি থাকবে।

Advertisement

তবে মধ্যমগ্রাম পুর এলাকায় বহাল থাকছে আগের নিয়মই। রাজ্য জুড়ে সপ্তাহে দু’দিন পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু সেই দিনগুলি বাদে, সপ্তাহের বাকি পাঁচ দিন মধ্যমগ্রামে আংশিক এবং সময়ভিত্তিক লকডাউন থাকবে বলে এ দিন স্থির হয়েছে। এই আংশিক লকডাউন চলবে আগামী ২৯ জুলাই পর্যন্ত। সেখানে বেলা ১টার পর থেকে কোনও দোকান খোলা রাখা যাবে না। পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক রথীন ঘোষ বলেন, “মধ্যমগ্রাম পুর এলাকায় আগের নিয়মেই আংশিক লকডাউন
থাকবে। তবে বেলা ১টার পর থেকে সব বন্ধ রাখা হবে।”

মানুষের হুঁশ না ফেরার ছবিটা অবশ্য এ দিনও ছিল স্পষ্ট। বারাসতে বেশ কিছু মানুষকে মাস্ক ছাড়া রাস্তায় বেরোতে দেখা যায়। কলোনি মোড়ের কাছে বারাসতের পুলিশ কর্তারা দাঁড়িয়ে থেকে নিয়মভঙ্গকারীদের সতর্ক করেন। আবার মাস্ক ছাড়া কিছু মানুষকে ঘুরতে দেখে র্যাফ লাঠি উঁচিয়ে তাঁদের দিকে ধেয়েও যায়। তা দেখে কিছু মানুষ পকেট থেকে মাস্ক বার করে পরে নেন তো কেউ আবার দৌড়ে পালান। এ দিন বারাসত ও মধ্যমগ্রামে বাসের সংখ্যা কম ছিল। ফলে অল্প সংখ্যক বাসে ভিড় ছিল নজরে পড়ার মতো। এমনকি কিছু লোককে বাসের ছাদেও সওয়ার হতে দেখা গিয়েছে। কেন এ ভাবে যাতায়াত করছেন? তাঁরা জানাচ্ছেন, বৃহস্পতিবার গোটা রাজ্যে লকডাউন। রাস্তায় গাড়ি কম, তাই এ ভাবেই বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন।
এ দিন বারাসত পুরসভায় বেলা ১২টা থেকে সর্বদলীয় বৈঠক শুরু হয়েছিল। তৃণমূলের পুর প্রশাসকেরা ছাড়াও বাম, কংগ্রেস এবং বিজেপির নেতৃত্ব সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বারাসতে ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের কথা ভেবেই সর্বসম্মতিক্রমে সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া অন্য উপায় নেই মনে করেই সহমত প্রকাশ করেন সকলে।

Advertisement

বিজেপির বারাসত জেলা সহ-সভাপতি শঙ্কর দাস বৈঠকে জানান, আংশিক বা সময়ভিত্তিক লকডাউনের মানে হয় না। অনেকেই বিধিনিষেধ মানছেন না। পরে তিনি ফোনে বলেন, “কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট আসছে তিন দিন পরে। ওই সময়ে রোগী রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ফলে সংক্রমণ তো ছড়াবেই। তাই সবাই সাত দিনের পূর্ণ লকডাউনের প্রস্তাব রাখি।”

বারাসত পুরসভার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক অশনি মুখোপাধ্যায় বলেন, “সর্বদলীয় বৈঠকে শনিবার থেকে সাত দিন সম্পূর্ণ লকডাউনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার আগে শুক্রবার মানুষকে কেনাকাটার জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছে।”

সিদ্ধান্ত হয়েছে, লকডাউনের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ থাকবে। প্রয়োজনে কেউ বেরোলেও তিনি যেন মাস্ক ছাড়া না থাকেন, পুলিশকে সে দিকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত আজ, বৃহস্পতি ও শনিবার রাজ্য জুড়ে লকডাউন থাকবে।

এ দিকে, বুধবার বিকেল ৫টা থেকেই বারাসত স্টেডিয়ামে সেফ হোম চালু হয়ে গেল। এ দিন সেফ হোমের ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেন বারাসত জেলা হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল। পরে তিনি জানান, জেলার করোনা কন্ট্রোল রুমে আসা অসংখ্য ফোনে মানুষ তাঁদের অসুবিধার কথা জানাচ্ছেন। চেষ্টা করা হচ্ছে সেই সব সমস্যার সমাধান করতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement