বন্ধ অশোকনগর বাজার। ছবি: সুজিত দুয়ারি
অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ৪ জন স্বাস্থ্যকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘বুধবার ৪ জনের লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট পেয়েছি। তাঁরা করোনা পজ়িটিভ। এ ছাড়া, বেসরকারি ভাবে জানতে পেরেছি, পুর এলাকার আরও ৭ জন বাসিন্দা করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন। সব মিলিয়ে পুরসভা এলাকায় বুধবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৫ জন।’’
পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ এবং বাসিন্দারা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় ৮টি মিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। সেখানে মোট ৪৮ জন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করেন। আক্রান্ত চার কর্মীও সেখানে কাজ করতেন। তাঁরা মূলত এলাকার গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক পরীক্ষা, ওষুধপত্র দেওয়া এবং বাচ্চাদের টিকাকরণের কাজ করে থাকেন। গত সপ্তাহেও শিশুদের টিকাকরণের কাজ করেছেন তাঁরা। শিশুদের সঙ্গে মায়েরাও এসেছিলেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশাপাশি আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীরা পুরসভা থেকে স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত কাজকর্ম করেন। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রসূতিদের তাঁরা অবশ্য শেষ দেখেছেন কয়েক দিন আগে। পুরসভার প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সিপিএমের চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। কারণ, শিশুদের টিকাকরণের সময়ে সঙ্গে তাঁদের মায়েরা আসেন। ফলে শিশু ও মায়েরা আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সংস্পর্শে এসেছিলেন। প্রসূতিদের তাঁরা শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছিলেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছি।’’ প্রবোধ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি দু’দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টিকাকরণের কাজও দু’দিনের জন্য বন্ধ থাকবে। আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সংস্পর্শে আসা মা, শিশু, প্রসূতিদের খুঁজে বের করা হচ্ছে। সব রকমের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে।’’ আরও ৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীর লালারস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
টিকা দেওয়া একটি শিশুর মা বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। তবে সকলের মাস্ক পরা ছিল। নিজেদের নিয়ে নয়, শিশুদের নিয়ে চিন্তা হচ্ছে।’’ পুরসভা ও ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি আলোচনা করে পুরসভা এলাকায় কয়েক দিনের লকডাউন করা হয়েছিল। বুধবার ছিল সেই লকডাউনের শেষ দিন। লকডাউন করেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সচেতন মানুষ ভয় পেতে শুরু করেছেন। প্রবোধ বলেন, ‘‘মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যে আনতে হবে।’’